বর্তমান আয় আর ব্যয়ের দুঃসহ ভোগান্তিতে নাজেহাল মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম। বাজার করতে এসে তার হাতের মুঠোয় থাকা টাকার অংকের চেয়ে, ক্ষুধা নিবারনের দামটা এখন কয়েগুন বেশি। দরকষাকষির জীবনে কি কিনবেন আর কিইবা কিনবেন না…প্রয়োজনীয় তালিকায় কাটছাঁটেও বেসামাল হিসেবের অংক ফাতেমা বেগমের।
১৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে বাজার করতে আসেন ফাতেমা বেগম। বিবিএস-বাংলাকে তিনি জানান, চার সদস্যর সংসারে প্রধান উপার্জনের মানুষটি ব্রেন স্ট্রোক করে বর্তমানে বিছানায়। একটি মাত্র মেয়ে একটি বেসরকারি চাকরি করে কোনো রকমে সংসারের হাল ধরে রেখেছেন। কিন্তু বাজারে পণ্যের উর্ধ্বমুখী দামটা তাদের ঘুণেপোকার মতো কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। সংসারের সব চাহিদা মিটিয়ে এ বাজারে দুমুঠো অন্ন জোগাড় করাই এখন বড্ড দায়। আর এ সমস্যার সমাধান জানেন না ফাতেমা বেগম।
শুধু ফাতেমা বেগমই নয় খরচের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় তালিকার কাটছাঁট করতে হচ্ছে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের।
হাসান মাসুদ সাহেব, মধ্য বাড্ডার বাসিন্দা একটি বেসরকারি চাকরি করেন। তিনি যে টাকা বেতন পান বর্তমানে খরচ তার চেয়ে বেশি। বাচ্চাদের নিয়ে এ শহরে টিকে থাকাই তার কাছে দায় হয়ে পড়েছে। সংসারের খরচ মেটাতেই এখন আগের চেয়েও বেশি টাকার যোগান দিতে হচ্ছে। তার উপর আবার বাচ্চাদের লেখাপড়া, ডাক্তার খরচ সব মিলিয়ে নাজেহাল মাসুদ সাহেব।
এমন অননেকেই আছেন যারা নিজেদের পরিচয় দিতেও লজ্জা পাচ্ছেন। কিন্তু জীবন চালানোও যে এখন বড্ড চ্যালেঞ্জের হয়ে পড়েছে…। মাছ, মাংস তো কিনতেই পাড়েন না সারা মাস, সবজি ও নিত্যপণ্য কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে এসব নিন্ম- মধ্যবিত্তরা।
বিগত দেড় বছর ধরে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির কারণে বারবার লকডাউনে একদিকে মানুষের আয় কমেছে, অন্যদিকে চাকরি হারিয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া দেশে নতুন দরিদ্র হয়েছেন ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। কমেছে তাদের ক্রয় ক্ষমতা। এদিকে দফায় দফায় ফুঁসে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার। দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অর্থনৈতিক বিপর্যয়।