করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর জুলাই মাস থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে দেশে। এমনকি এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর পরিসংখ্যানে জুলাই মাসটি ছিলো ভয়ঙ্কর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, সংক্রমণের ১৬ মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে শুধু জুলাই মাসেই আক্রান্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ এবং মারা গেছে ৬ হাজার ১৮২ জন। যা কিনা মোট মৃত্যুর তিন ভাগের একভাগ।
জুলাই মাসে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হবার কারণ হিসেবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আরেকটি কারণ গ্রামে-গঞ্জে প্রতিটি এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআর এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা দ্বিগুন। মানুষে মানুষের চলাফেরা, একসাথে ওঠাবসা এবং সামাজিক দুরত্ব না মানার কারণেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণটা বেশি হয়েছে। শনাক্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে জুলাই মাসটা ছিল সবচেয়ে বিপদজনক। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর এতোবেশি সংক্রমণ হবার আরেকটি কারণ, এপ্রিল থেকে বিভিন্ন জেলায় ও গ্রামে গ্রামে করোনা ছড়িয়ে পড়া।’
কোরবানির ঈদের জন্য নয় দিনের শিথিল লকডাউনে মানুষের অধিক চলাচল জুলাই পেরিয়ে অগাস্টেও ভয়াবহ পরিস্থিতি চলমান থাকার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘লকডাউনের ফল পেতে কিছুদিন অপেক্ষা করা লাগবে। লকডাউন আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে শিখিয়েছে, ঘরে থাকা শিখিয়েছে। তাই সামনের দিনগুলোতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে মৃত্যু ও শনাক্ত কমানো সম্ভব নয়।’
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের প্রভাবে এপ্রিলের পর থেকেই দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে শুরু করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নমুনা পরীক্ষা, হাসপাতালের বেড যতই বাড়ানো হোক, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আগামীর অনিশ্চয়তা কাটানো মুশকিল হয়ে পড়বে।