পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা ঘূর্ণিঝড় আসানি ক্রমশ দুর্বল হয়ে এখন ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের দিকে যাচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে এটি আরও দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ উপকূলে এ ঝড়ের আঘাত হানার আভাস নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এখন পর্যন্ত ঝড়টির গতিপ্রকৃতি যা, তাতে এর বাংলাদেশের দিকে আসার আশঙ্কা কম। তবে এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় সর্বোচ্চ ২০৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড়সংক্রান্ত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১২ তে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা প্রবল ঘূর্ণিঝড় আসানি পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে পরবর্তী ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে থাকা সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে না যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ছানাউল হক মণ্ডল বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির গতিপ্রকৃতি যা, তাতে এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে। সন্ধ্যার দিকে এটি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, আজ রাজধানীর আকাশ সারাদিনই মেঘলা থাকতে পারে। সামান্য পরিমাণ বৃষ্টিও হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সিলেটেও বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় খেপুপাড়ায়, ২০৭ মিলিমিটার। সন্দ্বীপে ৬৫ মিলিমিটার, সিলেটে ৬৯ মিলিমিটার এবং পটুয়াখালী সদরে ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ একটানা সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।`