মানুষের জীবন এখন অনেকটাই প্রযুক্তি নির্ভর। কর্মজীবী মানুষের একটা বড় অংশ বর্তমানে অনলাইনে কেনাকাটা করে। তাই একদিকে যেমন এই সেক্টরে ক্রেতা বেড়েছে, ঠিক তেমনি বিক্রেতাও বেড়েছে। সবাই নিজ পরিসরে উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে উঠছে। শুধু তরুণ প্রজন্মই নয়, ঘরে বসে থাকা অনেক গৃহিণীও এখন ব্যবসায় মনোযোগ দিচ্ছে। যা আমাদের দেশের জন্য ইতিবাচক।
তবে এই অনলাইন বিক্রেতাদের একটা সমস্যায় প্রায়ই পড়তে হয়। সেটি হচ্ছে গ্রাহকদের হাতে পণ্য পৌঁছে দেয়া। কেননা প্যাকেজিং থেকে শুরু করে গ্রাহকের কাছে যদি ভালোভাবে আপনি পণ্য না পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে আপনার সব চেষ্টাই বিফলে যাবে।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানি যেমন- পাঠাও, উবার,রেডক্স ইত্যাদি এই পণ্য ডেলিভারির কাজ শুরু করেছে। ঠিক তেমনি এক তরুণ উদ্যোক্তা পারভেজ হাসান সুমন ‘Bong Courier’ নামক পণ্য ডেলিভারির এক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এবার চলুন আমরা এই স্বপ্নবাজ তরুণের গল্প শুনে আসি।
উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনে গল্পটা কী?
করোনার কারণে যখন গোটা বিশ্ব থমকে গেছে, তখন আমাদের নিজের জীবনও স্থবির হয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে প্রায় হতাশায় ডুবে গিয়েছিলাম। ঠিক তখন ভাবলাম, এভাবে বসে থাকলে জীবন চলবে না। তাই নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে এবং বাকি বন্ধুদেরও বেকারত্বের দশা থেকে মুক্তি দিতে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে এই উদ্যোগ নেই।
পেইজের নাম কী এবং এর নামকরণ নিয়ে বলুন
আমার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘Bong Courier’ বঙ থেকে বাংলা বা বঙ মানে বাংলা। মূলত বাংলার মাটি ও মানুষের কথা মাথায় রেখেই এই নাম দিয়েছি। আর এর পেছনে আরেকটি উদ্দেশ্যও ছিল। বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং করার উদ্যেশ্য থেকেই ‘Bong’ নামকরণ করেছি। আমাদের স্লোগান হচ্ছে- ‘We Deliver Dreams’
কি নিয়ে কাজ করছেন?
আমরা মূলত ই-কমার্স পার্সেল এবং ডকুমেন্টস ডেলিভারি সার্ভিস নিয়ে কাজ করছি।
প্রতিষ্ঠান নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
আমাদের স্বপ্ন অনেক বড়। বাংলাদেশে ৬৪ জেলার থানা পর্যায়ে অটোমেশন সিস্টেমে নিরবচ্ছিন্ন পার্সেল হোম ডেলিভারি সার্ভিস চেইন গড়ে তোলা যায়,এ নিয়ে অদম্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
নিজেকে কোন অবস্থনে দেখতে চান?
ভবিষ্যত বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির নেতৃত্বদানকারী তরুণদের মধ্য অন্যতম একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। এবং নিজে সহ বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান গড়ে তোলা আমার বিজনেসের অন্যতম উদ্যেশ্য।
বাকিদের কাজের সাথে আপনার কাজের পার্থক্য কি?
ই-কমার্স পণ্য পরিবহন সেবা প্রদানকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে Bong Courier এর মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে অন টাইম কমিটেড সার্ভিস প্রভাইড করা এবং ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ ডিজিটাইলাইজেশন বা অটোমেশনের মাধ্যমে তড়িৎ গতি সম্পন্ন পণ্য পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা। আমাদের প্রতিনিধিত্বমূলক টিম সমাজে সংস্কার বা উন্নয়ন মূলক নানা কাজে দীর্ঘসময় যুক্ত ছিলেন। জাতীয় নানা দুর্ভোগ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সামনের সারিতে থেকে কাজ করার নানা অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। করোনার অভিজ্ঞতার পর সারা দেশে মানুষের কাছে নিরাপদভাবে পণ্য, ঔষুধ খাবার পাঠানোর সমস্যার সমাধানের চিন্তা থেকেই আমাদের পথচলা।
নতুনদের জন্য কোনো পরামর্শ?
সমাজের নানান সমস্যা সমাধানের চিন্তা ও উদ্ভাবন করাই তারুণ্যের কাজ। নিজের টেরিটোরি সমস্যা চিহ্নিত করে সেটিকে সংঘবদ্ধভাবে সামাজিক কিংবা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নেমে পড়াই উদ্যোগের প্রথম ধাপ। তাই তরুণদের কিংবা নতুনদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা বলতে চাই। সমস্যা চিহ্নিত করে নেমে পড়তে হবে।