fbpx

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক সাধারণ সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যতক্ষণ আছি কাজ করে যাব, তবে আমি চাই, সব মানুষই যেন ন্যায়বিচারটা পায়। দ্রুত মামলাগুলো যেন নিষ্পত্তি হয়। একটা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি যেন সৃষ্টি হয়। সেই পরিবেশটা যেন থাকে। সেটাই আমরা চাই। আমরা তো আইন প্রণয়ন করি। আপনারা (বিচারক) আইন ব্যবহার করেন। কাজেই সেখানেও যখন যেটা হয়, আমরা সংশোধন করি, আরও উন্নত করি। যা-ই করি, মানুষের কল্যাণে, মানুষের উন্নয়নে।’

তিনি বলেন, ‘আমি যতক্ষণ আছি, এটুকু বলব, বাংলাদেশে আমাদের মানুষ যেন অন্তত আইনের শাসন পায়, সঠিক বিচার পায়। তাদের স্বার্থে এই জুডিশিয়াল সার্ভিসের জন্য যা যা করণীয়, তা আমরা করে দেব।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ই-জুডিশিয়ারি চালু করা গেলে মামলা ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আসবে। বিচারকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা আমরা করে দেব, সেই সঙ্গে একটা আইনি বিশ্ববিদ্যালয় আমরা প্রতিষ্ঠা করব। আমি মনে করি যে, সর্বক্ষেত্রে ট্রেনিংটা একান্তভাবে দরকার।’

আমার ইচ্ছে আছে আমাদের এই জুডিশিয়ারি সার্ভিসটাকে আরও আধুনিক, যুগোপযোগী এবং অ্যাকাডেমি বা যা-ই করব, তা আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন হয়, যাতে বিশ্ব থেকে কেউ এসে দেখতে পারে। আমরা যেমন বিদেশে পাঠাব ট্রেনিংয়ের জন্য, বিদেশ থেকেও যেন আমাদের এখানে আসে, সেই ধরনের করেই আমি করতে চাই-জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ৬৪ জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জন্য ৮ থেকে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৪টির কাজ শেষ; আরও ৭টি সমাপ্তির পথে। তা ছাড়া সব জেলারগুলো উন্নতি করে দিচ্ছি। জেলা জজ আদালতে এজলাস সংকট নিরসনে ২৮টি জেলায় জজ আদালত ভবন যেগুলো তিন তলা, সেগুলো চার তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী করে দেয়া হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেদিন জজ সাহেবরা এই যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, বাংলাদেশে যে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছিল, এর ফলে তা দূর হয়েছিল। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ধারা প্রবর্তন করা সম্ভব হয়েছিল এই রায়ের মধ্য দিয়ে।’

ঐতিহাসিক এই রায়ের দিনের কথা স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে আছে, বিচারের রায় যেদিন দেওয়ার কথা, গোলাম রসুল সাহেবের (মরহুম বিচারক কাজী গোলাম রসুল) আদালতে। তিনি যেদিন এই রায় দেবেন, সেদিন ছিল ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর। সেদিন বিএনপি-জামায়াত হরতাল ডেকেছিল; যাতে জজ সাহেব কোর্টে যেতে না পারেন, রায় দিতে না পারেন। তাছাড়াও তার ওপর অনেক জুলুম-অত্যাচার করারও চেষ্টা করা হয়েছিল।’

এই বিচারকের সাহসের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি অত্যন্ত সাহসী একজন ব্যক্তি ছিলেন, তিনি কোনও কিছু মানেননি। সেই রায় কিন্তু গোলাম রসুল সাহেব দিয়ে যান। কারণ তার ওপরে, তার মেয়েদের, কী হয়েছিল সেটা আমি জানি। যাতে বিচারটা না হয়, তারা বাধা দিয়েছিল। আমি বলবো, এই যে সাহস দেখানো, এটাই ছিল বড় কথা, তিনি সেই রায়টা দিয়ে যান।’

পরবর্তীকালে উচ্চ আদালতে এই বিচারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি, আবার সেই বিচার যখন শুরু হয়, তখনও অনেক বাধা ছিল। কিন্তু যাই হোক, আল্লাহর রহমতে সেই বিচার করে রায় আমরা পেয়েছি, রায় কার্যকর করা হয়েছে। জজ সাহেব রায় দিয়েছিলেন বলেই আমরা সেটা (রায়) কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছিলাম।’

Advertisement
Share.

Leave A Reply