আজ বুধবার (৬ অক্টোবর) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভমহালয়া বা পুণ্যলগ্ন। এ দিন থেকেই দেবীপক্ষের শুরু।
শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া। শ্রী শ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই ‘চন্ডী’তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা।
শাস্ত্রমতে, এ দিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। আজ থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়।
আগামী ১১ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত আজ বুধবার থেকেই পূজার্থীরা দুর্গাপূজার আগমণধ্বনি শুনতে পাবেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক। পুরাণ মতে, অসীম হ্মমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতারিত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের অধীশ্বর হতে চায়। শিবের বর অনুযায়ী, কোন মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান।
মহালয়ার আর একটি দিক হচ্ছে, এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন, তারা তাদের পূর্বপুরুষের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। সনাতন ধর্ম অনুসারে, এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয়, তাকে মহালয়া বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া। পিতৃপক্ষেরও শেষদিন এটি।
দুর্গাপূজার এই সূচনার দিনটি সারা দেশে বেশ আড়ম্বরের সাথে উদযাপিত হবে। আজ ভোরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য মন্দিরেও এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি দেবীর আগমনী উপলক্ষে দিনটি উদযাপন করতে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া, গুলশান বনানী সর্বজনীন পূজা পরিষদের আয়োজনে ভোরে বনানী মাঠে দেবী বরণের আয়োজন শুরু হয়েছে। তবে, করোনা মহামারির প্রকোপের কারণে এবারের আয়োজনে কিছু ভিন্নতা থাকতে পারে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ২১৩টি। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ১১৮টিতে। যা গত বছরের চেয়ে এক হাজার ৯০৫টি বেশি। আর ঢাকা মহানগরে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ২৩৮টি। যা গত বছর থেকে চারটি বেশি।