ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সময় সকাল আটটার (বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টা) পর পরপর অন্তত দুইটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় বলে জানান কিয়েভে বিবিসি সংবাদদাতা।
এসব হামলায় অন্তত আটজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেন সরকারের একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন। বেশ কিছু যানবাহন ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হবার খবরও পাওয়া গেছে।
বিবিসির একজন সংবাদদাতা যখন টেলিভিশনে সরাসরি খবর দিচ্ছিলেন তখনও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।
কিয়েভের সাধারণ মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছেন সেখানকার সামরিক প্রশাসনের আঞ্চলিক প্রধান ওলেক্সি কুলেবা।
কুলেবা টেলিগ্রামে শহরটির বাসিন্দাদের পাঠানো বার্তায় বলেন, ইউক্রেনের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অর্থাৎ প্রতিরক্ষা কাজ করছে, কিন্তু আগে জারি করা ‘সতর্কতা’ এখনো বহাল রয়েছে।
সর্বশেষ কয়েকমাসে কিয়েভে কোন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি।
তবে ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ কিয়েভের আশেপাশে হামলা চালিয়েছিল রুশ বাহিনী। কিন্তু এবারের হামলা কিয়েভের মূল কেন্দ্রের আরো বেশি কাছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাত্র দুইদিন আগে রাশিয়ার সাথে অধিকৃত ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করা একমাত্র সেতুটি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর এই হামলার ঘটনা ঘটলো।
তবে মস্কো এখনো এ হামলার ব্যাপারে মন্তব্য করেনি।
এদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অলেক্সি রেজনিকভ বলেছেন, ‘সন্ত্রাসীদের ক্ষেপণাস্ত্র কখনো তার দেশের সাহস ধ্বংস’ করতে পারবে না।
রেজনিকভ টুইটারে লিখেছেন, রাশিয়ার হামলা ‘তার দেশের মিত্রদের মনে কাঁপন’ ধরাতে পারবে না।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটশকো বলেছেন, শেভচেনকিভস্কি শহরের কেন্দ্রে আঘাত হেনেছে এই বিস্ফোরণ।
দেশটির প্রখ্যাত সাংবাদিক আন্দ্রি সাপলিয়েঙ্কো বলেছেন, বিস্ফোরণে অন্তত একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
তবে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একজন সহকারী ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন কিয়েভে হামলায় অন্তত ৮ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন।
রোস্তিস্লাভ স্মিরনভ আরো লিখেছেন, বিস্ফোরণে ছয়টি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। আরো পনেরটি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কিয়েভের জরুরি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বলেছে, সকালের হামলায় বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকজন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
কিন্তু হতাহতের সংখ্যা ঠিক কত সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা এখনো পাওয়া যায়নি।
কিয়েভ থেকে বিবিসি সংবাদদাতা পল অ্যাডামস জানিয়েছেন, শুধু কিয়েভ নয়, ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গা থেকেই বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
গণমাধ্যমের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে সরাসরি ঘটনাস্থলে হাজির হতে পারেননি সাংবাদিকেরা।
তবে বিভিন্ন সূত্রে সংগ্রহ করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণে গাড়ি এবং বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপ দেখা গেছে।