fbpx

কোন বিষয় মাথায় রেখে শিশুদের ভয়ের গল্প বলা উচিত

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ভয় আমাদের জীবনের অংশ। ভূত প্রেতের অবাস্তব ভয়ের বিষয়গুলো আমাদের চারপাশে ঘোরাঘুরি করে গল্প আর সিনেমার আকারে। তাছাড়া মৃত্যু, ভয়ংকর মানুষ, ভয়ংকর প্রাণির মত বাস্তব বিষয়ও আছে আমাদের পৃথিবীতে। আগে পরে শিশুরা এর সম্মুখীন হবেই তা সে যেভাবেই হোক না কেন। তাই আপনার সন্তানের ভয়ের কন্ট্রোলটা আগেই আপনি নিয়ে নিন।

বুঝে শুনে ভয়ের বিষয়গুলোর সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দিন। তাদের সাহসী করে তুলুন। তাদের নিশ্চিত করুন, তারা নিরাপদ। তাহলে ভয় তাদের ভীতু করবে না, সাহসি করবে। এ কাজটি প্রাথমিকভাবে গল্প বলা দিয়ে হতে পারে। তবে শিশুদের ভয়ের গল্প বলার সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত।

১. ৩ বছরের কম বয়সি শিশুদের ভূতের গল্প বা যেকোনো ভয়ের গল্প শোনানোই উচিত নয়। ৫/৬ বছরের পর তাকে ভয়ের গল্প শোনাতে পারেন, তবে তা শিশুর মানসিক শক্তি বিবেচনায় রেখেই করবেন। তবে কোনো কোনো গবেষক মনে করেন, শিশুদের আরও পরে অর্থাৎ ৭/৮ বছরের আগে ভয়ের গল্প বলা উচিত নয়।

কোন বিষয় মাথায় রেখে শিশুদের ভয়ের গল্প বলা উচিত

ছবি: সংগৃহীত

তবে আসল কথা হল, ভয়ের গল্প বলবার আগে বা গল্প বাছাই করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে শিশুটি তা শোনার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত আছে। শুধু শুধু তাকে ভয়ের কোন বিষয় তা হোক সত্য, হোক মিথ্যা, বলে ভয় দেখানোর প্রয়োজন নেই।

২. ভয়ের গল্প বলার আগে শিশুকে নিশ্চিত করুন, যে এগুলো কাল্পনিক এবং সে সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং আপনারা অর্থাৎ বাবা মা তাকে যে কোনো পরিস্থিতিতে রক্ষা করবেন। এই মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে দয়া করে শিশুকে ভয়ের জগতে প্রবেশ করাবেন না। এমনিতে যদি শিশু একা ঘুমায় তাহলে, যে দিন ভয়ের কোন গল্প তাকে শোনাবেন, যদি সে ভয় পায়, তবে সেদিন তাকে সাথে নিয়েই ঘুমোতে যাবেন।

কোন বিষয় মাথায় রেখে শিশুদের ভয়ের গল্প বলা উচিত

ছবি: সংগৃহীত

তাকে অযথা ভয় দেখাবেন না এবং তাকে নিশ্চিত করুন স্কুলে বন্ধুদের কাছে, টিভিতে, বইতে বা ইন্টারনেটে যেখানেই সে ভূত বা ভয়ের কিছু দেখুক বা শুনুক না কেন, সে সব সময়ই নিরাপদ। কারণ এগুলো কাল্পনিক। 

৩. প্রথম প্রথম ছবিসহ ভূতের গল্প বা ভয়ের গল্পের বই পড়ে শোনানোর প্রয়োজন নেই। ছবিতে ভূত দেখে বা ভয়ের কিছু দেখে তার মাথায় সেই ছবি থেকে যেতে পারে। এটা তার হেলুসিনেশন ঘটাতে পারে। তাই প্রথম প্রথম আপনি মেমোরি থেকে গল্প বলুন। তার রিয়েকশান লক্ষ্য করুন।

কোন বিষয় মাথায় রেখে শিশুদের ভয়ের গল্প বলা উচিত

ছবি: সংগৃহীত

এরপর আপনি নিজেই যখন বুঝতে পারবেন সে ততটা ভয় পাচ্ছে না, তখন ছবিসহ ভয়ের গল্পের বই তার হাতে দিতে পারেন। ৫/৬ বছর বয়সের আগে ভয়ের কিছু টিভিতে বা ইন্টারনেটেও দেখতে দেয়া উচিত নয়। 

৪. খুব ভালভাবে খেয়াল রাখুন আপনার শিশু ভয়টা কতটুকু নিতে পারছে। গল্পটা বলার উপর অবশ্য অনেক কিছু নির্ভর করে। সামান্য জিনিসেও খুব ভয় দেখানো যায় আবার খুব ভয়ের কিছুও হালকা ভাবে বলা যায়। এ দায়িত্ব আপনারই। যেন আপনার শিশু অযথা খুব ভয় পেয়ে না যায়। বাচ্চা বেশি ভয় পেলে প্রয়োজনে মাঝ পথে গল্প বলা থামিয়ে দিন।

কোন বিষয় মাথায় রেখে শিশুদের ভয়ের গল্প বলা উচিত

ছবি: সংগৃহীত

অবশ্য এমন গল্প বাছাই করাই উচিত নয় যেগুলো তাদের বয়সের বিবেচনায় খুব ভয়ের। বই কেনার সময় বইতে উল্লেখকৃত বয়স খেয়াল করেই বই কিনুন এবং গল্প বাছাই করুন।

৫. ভয়ের গল্পগুলো থেকে যেন শিশু ভয় নয়, সাহস নিতে পারে, তা নিশ্চিত করুন। গল্পের শেষে তাকে বুঝিয়ে দিন,ভুত চলে গেছে এবং সবাই এখন সুখে শান্তিতে বসবাস করছে।

কোন বিষয় মাথায় রেখে শিশুদের ভয়ের গল্প বলা উচিত

ছবি: সংগৃহীত

ভয় নয় বরং গল্পের হিরোর সাহসিকতা, বুদ্ধি এবং শক্তির দিকে তার মনোযোগ ঘুরিয়ে দিন।

লেখক : তানজীল হাসান, প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, সুপার কিড

Advertisement
Share.

Leave A Reply