fbpx

টেশিসকে ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনের উপযোগী করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

টেলিফোন শিল্প সংস্থা টেশিসকে স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনে সক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা অপরিহার্য উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপ পৌঁছে দিতে ২০১৫ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স বৈঠকে টেশিসকে শক্তিশালী করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে টেশিসকে পুরোপুরি প্রস্তুত করার কাজ আমরা শুরু করেছি।

রোববার ঢাকায় টেলিযোগাযোগ ভবন মিলনায়তনে টেশিস এর ভৌত অবকাঠামো আধুনিকায়ন, নতুন ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও সংযোজন প্লান্ট স্থাপন এবং বিদ্যমান প্লান্টসমূহের উৎপাদন ও সংযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ এর সম্ভাব্যতা সমীক্ষার পরিকল্পনাপত্র উপস্থাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মোস্তাফা জব্বার এ কথা বলেন।

টেশিসকে ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনের দক্ষতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদনের পরিকল্পনাপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেশিসকে সময়োপযোগী ও লাগসই ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনে অধিকতর সক্ষমতা তৈরি ও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলার লক্ষ্যে এই সমীক্ষাটি পরিচালিত হচ্ছে।

টেশিস থেকে বর্তমানে উৎপাদিত দোয়েল ল্যাপটপ, দোয়েল ডেস্কটপ, ট্যাব ও খুচরা যন্ত্রপাতি, ডিজিটাল পিএবিক্স, ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি, বায়োমেটিক্স ভেরিফিকেশন্স ইকুইপমেন্ট, স্মার্ট টেলিভিশন এবং ডিজিটাল এনার্জি মিটার উৎপাদনে গুণগতমান বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রাহক আস্থা অর্জন করে দেশে ডিজিটাল এসব যন্ত্রের আমদানি নির্ভরতা হ্রাস এবং রোবট, এআই, আইওটিসহ আগামী দিনের সম্ভাব্য ডিজিটাল প্রযুক্তি তৈরিতে টেশিসকে উপযোগী করে তৈরি করার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিকে অধিকতর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলাই এ সমীক্ষার লক্ষ্য।

মন্ত্রী বলেন, টেশিসকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাই একমাত্র লক্ষ্য নয়, এর সাথে আবেগ জড়িয়ে আছে। টেশিসকে শক্তিশালী করার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আমাকেই বলা হয়েছিল। এটা আমার আবেগের জায়গা।

শিক্ষার ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, দক্ষ জনবল ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে লাগসই ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদন ও সংযোগের জন্য নির্ভরযোগ্য করে গড়ে তোলা যাবে না তা হতে দিতে পারি না। টেলিফোন শিল্প সংস্থা উৎপাদিত দোয়েল ল্যাপটপ ইতোমধ্যেই আস্থার জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। ২০১১ সালে দোয়েল যাত্রা শুরু করার পর গুণগতমানের ঘাটতিসহ নানা কারণে দোয়েলকে অনেকটাই গ্রাহকের আস্থার জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সে অবস্থা এখন আর নাই। টেশিস সে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছে।

আইসিটি বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরবরাহকৃত হাজার হাজার দোয়েল কম্পিউটার ও ল্যাপটপ অত্যন্ত গুণগত মানসম্পন্ন ডিভাইস নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী সমীক্ষা পরিকল্পনার ওপর তার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, টেশিসকে একটি অনুকরণীয় রাষ্ট্রীয় লাভজনক ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও তার প্রতিকারের উপায়সহ বিভিন্ন কারিগরি সমীক্ষায় স্পষ্ট করার পরামর্শ ব্যক্ত করেন। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামতসহ কারিগরি বিভিন্ন বিষয় সন্নিবেশিত করে সম্ভাব্য স্বল্প সময়ের মধ্যে এটি চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান টেশিস উৎপাদিত ডিজিটাল যন্ত্রের যথাযথ বাজার চাহিদা, যন্ত্র ব্যবহারকারি টার্গেট গ্রুপ নিরূপণ, বিদ্যমান জনবলকে উপযোগী করে তৈরির জন্য করণীয়সহ টেশিসকে একটি যুগোপযোগী ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়াদি সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সুচিন্তিত মতামতের প্রতিফলন টেশিসকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সহায়ক হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল টেলিফোন শিল্প সংস্থার যাত্রা শুরু হয়। এর আগে ১৯৬৭ সালে সরকার ও পশ্চিম জার্মানির মেসার্স সিমেন্স এজি এর যৌথ উদ্যোগে টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন নামে প্রতিষ্ঠানটি জন্ম লাভ করে। এনালগ ও ম্যানুয়্যাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, টেলিফোন সেট ও টিন্ডটি সম্পৃক্ত যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও উৎপাদন ছিল প্রতিষ্ঠানটির মূল কাজ ছিলো। ২০০৮ সালে সিমেন্স তার অংশ ছেড়ে দেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির সকল শেয়ার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply