fbpx

তামাকের মূল্য বৃদ্ধিই ধূমপান ছাড়ার উৎসাহ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

আজ বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। বিকল্প খাদ্য ফসল উৎপাদন ও পুষ্টিকর ফসল চাষে তামাক চাষিদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘গ্রো ফুড, নট টোব্যাকো।

তামাক চাষ কৃষকের স্বাস্থ্য, মাটির স্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে গোটা জনস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরুপ। দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক প্রতিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখে তামাক। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকটের পেছনে সংঘাত-যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পাশাপাশি তামাক চাষের একটি প্রভাব রয়েছে।

বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ খুবই কম, যা মাত্র ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ ৭ হাজার একর কিন্তু তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশ ১৩ তম স্থানে অবস্থান করছে।

তামাক শ্রমনির্ভর ফসল। তামাক চাষের শুরু থেকে বিক্রি পর্যন্ত প্রায় ৯ মাস সময় লাগে। ফলে এই জমিতে অন্য খাদ্যশস্য চাষ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তামাক চাষ যেহেতু মাটির উর্বরতা হ্রাস করে, তাই এই জমিতে অন্যান্য ফসল উৎপাদনের ক্ষমতাও কমতে থাকে।

বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করে। তামাকজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মারা যায়। গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি, ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী দেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সহায়তায় তামাকবিরোধী গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স ‘তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ: বাজেট ২০২৩-২৪’ শীর্ষক একটি কর্মশালাযর আয়োজন করে।

আইএমএফ ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশকে আসন্ন অর্থবছরেই মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক পাঁচ শতাংশ অতিরিক্ত কর রাজস্ব আদায় করতে হবে। তামাকের মতো স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যের দাম কার্যকরভাবে বাড়িয়ে এই লক্ষ্যমাত্রার উল্লেখযোগ্য অংশ পূরণ করা সম্ভব। কর্মশালায় আরও জানানো হয়, অন্যান্য স্তরের তুলনায় নিম্নস্তরে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের তামাক ব্যবহারকারীকে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করবে। বর্তমানে সিগারেট ব্যবহারকারীদের প্রায় ৭৫ শতাংশই কম দামি সিগারেটের ভোক্তা এবং এই স্তরে সম্পূরক শুল্কহার মাত্র ৫৭ শতাংশ।

আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যের কর ও মূল্যবৃদ্ধি-সংক্রান্ত যেসব প্রস্তাব কর্মশালায় তুলে ধরা হয় সেগুলো হচ্ছে, নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৪০ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৩৫ টাকা ৭৫ পয়সা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক (চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫ শতাংশ) আরোপ করতে হবে। এর পাশাপাশি মধ্যম স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ টাকা ৫০ পয়সা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করতে হবে। উচ্চ স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১১১ থেকে ১২০ টাকা নির্ধারণ করে ৭৮ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪২ থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৯৮৭ সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস চালু করে। প্রতিবছর ৩১ মে তারিখে বিশ্বজুড়ে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা ধরে তামাক সেবনের সমস্ত প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে ৷

Advertisement
Share.

Leave A Reply