গত এক বছরে দেশে ঋণ খেলাপির পরিমাণ বেড়েছে দুই হাজার ৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিন মাসে বেড়েছে তিন হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ছিল ৯৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। জুনে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। আর গত বছরের জুনে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে দুই হাজার ৪৮ কোটি টাকা। আর তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ খেলাপি ছিল। গত জুনে যা বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নথিপত্রে খেলাপি ঋণ যত দেখানো হয়, প্রকৃত চিত্র তার চেয়ে তিন গুণ বেশি। অনেক গ্রুপের ঋণ আদায় না হলেও বছরের পর বছর খেলাপি করা হয় না। আবার একই ঋণ বারবার পুনঃ তফসিল করে ঋণ নিয়মিত রাখা হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালজুড়ে সরকার ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দিয়েছে। সে সময় কাউকে ঋণ খেলাপি করা হয় নি। তবে চলতি বছর এই সুবিধা না থাকলেও ঋণ পরিশোধে বেশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্ত এরপরও খেলাপি ঋণ ফের বাড়তে শুরু করেছে।
২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেখানে বলা বলেছিল, বাংলাদেশে খেলাপি আড়াল করে রাখা আছে। এখানে খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ করা হয়, প্রকৃত খেলাপি ঋণ তার তুলনায় অনেক বেশি। তারা বলছে, বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ হবে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা।