fbpx

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল: প্রধানমন্ত্রী

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খেলেও বাংলাদেশের অবস্থা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মানুষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আজকে আমি জানি, কিছু কথা ব্যাপকভাবে প্রচার হচ্ছে নানাভাবে। অনেকেই বিভ্রান্ত হতে পারেন। সেখানে আমি বলব যে বিভ্রান্ত হবার মত কিছু নেই।”

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স, ডিএসসিএসসিতে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২২ ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০২২ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্য, যখনই একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দেশটা অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায়, সকলের তা হয়ত পছন্দ হয় না, এটা হলো বাস্তব।”

১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পূণর্গঠনে মনোনিবেশ করলে বাংলাদেশ ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল। সে কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “এর পরে কিন্তু আর কখনো আমাদের প্রবৃদ্ধি এত বৃদ্ধি পায়নি। আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার সরকারে আসার পর আমরা কিন্তু ৮ ভাগ পর্যন্ত আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারী যে অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তা আরেক ‘দুর্ভাগ্যের বিষয়’। তার উপর আবার ‌’মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধের সাথে এলো স্যাংশান এবং পাল্টা স্যাংশান। যার ফলে আজকে আন্তর্জাতিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে, উন্নত দেশগুলো বা ধনী দেশগুলোও আজকে আপনারা জানেন যে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত এবং তারা হিমশিম খাচ্ছে।”

তারা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের ব্যবস্থা নিচ্ছে, খাদ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। সেই অবস্থায়ও আমি বলতে পারি বাংলাদেশকে এখনো স্থিতিশীল অবস্থায় রাখতে আমরা সক্ষম হয়েছি- অনুষ্ঠানে বলেন শেখ হাসিনা।

মহামারীর মধ্যে সারা বিশ্বে লকডাউনে ভ্রমণ ও আমদানি বন্ধ থাকাকে রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও তার সরকার বিনামূল্যে টিকা দিয়েছে, প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতিকে সচল রেখেছে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে আমদানি পণ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা এখানে কোনো কার্পণ্য করিনি। আমাদের ডলার খরচা করতে হয়েছে, রিজার্ভ খরচা করতে হয়েছে। আমরা করেছি।’

কিন্তু তারপর আমাদের আমদানি রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিনিয়োগ হচ্ছে, আমাদের ফসল উৎপাদন হচ্ছে, আমরা সার থেকে শুরু করে সব কিছু আমাদের কৃষকদের কাছে খুব স্বল্পমূল্যে দিচ্ছি। যার যেখানে যতটুকু জায়গা আছে, সেখানে যে যা পারবে, তাই উৎপাদন করার আহ্বান এ অনুষ্ঠানেও জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, বিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে, বিশেষ করে খাদ্য সঙ্কট, তা যেন বাংলাদেশে না হয়, বলেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, “সকলের কাছে আমার একটা অনুরোধ থাকবে, আমাদের কোনো রকম বিলাসিতা চলবে না। কারণ বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কাটা কিন্তু আমাদের উপর এসে পড়বে এবং পড়তে যাচ্ছে, পড়েছে। সেটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ বিশ্বটা এখন গ্লোবাল ভিলেজ। বিশ্বটা একে অপরের উপর নির্ভরশীল। সেটা মাথায় রেখে সকলকে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য আমি অনুরোধ জানাব।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সম্পদ আমাদের রক্ষা করে চলতে হবে। আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলব না। আমরা নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব। নিজের দেশকে নিজে গড়ে তুলব। এই কথাটা যদি আমরা মাথায় রাখতে পারি, আর এই আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে যদি চলতে পারি, ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, কেউ রুখতে পারবে না।”

বাংলাদেশ আর্থ সামাজিকভাবে উন্নতি করুক; সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, মাদক, দুর্নীতি থেকে মুক্ত থেকে এগিয়ে যাক, সেটাই তার সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা কারো সাথে যুদ্ধ চাই না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের একটা প্রতিরক্ষা নীতিমালা দিয়ে গেছেন যে সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরীতা নয়। বাংলাদেশ একটা দেশ, পৃথিবীতে আমরা এটুকু দাবি করতে পারি যে প্রতিটি দেশের সাথেই আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে এবং সেটা আমরা ধরে রাখতে পেরেছি। আমরা সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছি।”

Advertisement
Share.

Leave A Reply