পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে পঞ্চম সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে বুধবার সকাল থেকে প্রেসিডেন্ট গার্ডের সৈন্যরা আটকে রাখার কয়েক ঘণ্টা পরই সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করেছে বলে দাবি করছে।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই অভ্যুত্থান আফ্রিকার উগ্রপন্থী জঙ্গিবাদকে নতুনভাবে উস্কে দিতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক ফোন কলে আটক প্রেসিডেন্টকে ওয়াশিংটনের ‘অটল সমর্থনের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও বলেছেন যে তিনি রাষ্ট্রপতির সাথে কথা বলেছেন এবং জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
মি. বাজুম পশ্চিম আফ্রিকায় ইসলামি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিমা মিত্র হিসেবে পরিচিত।
দেশটিতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত স্থল ও আকাশ সীমান্ত অস্থায়ীকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
বর্তমানে দেশটিতে কারফিউ চলছে। কর্নেল মেজর আবদ্রামানে বলেন, সৈন্যরা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর দ্য সেফগার্ড অব দ্য হোমল্যান্ডের (সিএনএসপি) হয়ে কাজ করছিল।
সৈন্যদের টিভি ঘোষণার পর ব্লিঙ্কেন প্রেসিডেন্ট বাজুমের মুক্তির আহ্বান জানান। তিনি নিউজিল্যান্ডে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন যে ‘এ ঘটনা স্পষ্টতই যা প্রমাণ করে তা হল শক্তির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা এবং সংবিধানকে অস্বীকার করার প্রচেষ্টা।’
রাষ্ট্রপতি বাজুমের আটকের শর্তগুলি অস্পষ্ট রয়ে গেছে এখনও।
পশ্চিম আফ্রিকার অর্থনৈতিক ব্লক ইকোওয়াস বলেছে যে এটি নাইজারে ‘জোর করে ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টাকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাই’
ইকোওয়াসের পক্ষ থেকে, বেনিনের প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস ট্যালন একটি মধ্যস্থতা মিশনে রাজধানী নিয়ামে পৌঁছেছেন।
ট্যালন বলেন, নাইজারে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজন হলে ‘সব উপায়’ ব্যবহার করা হবে, কিন্তু আদর্শ হবে সবকিছু শান্তি ও সম্প্রীতির সাথে করা।’
শহরটি বেশিরভাগ শান্তিপূর্ণ ছিল, যদিও অভ্যুত্থানের সময় সৈন্যরা বিক্ষোভ ভাঙতে গুলি চালায়।
এর আগে বুধবার প্রেসিডেন্ট বাজুমের সমর্থকরা নিয়ামেতে সমাবেশ করেছে।
নাইজারে সেনা অভ্যুত্থান একদম নতুন কিছু না, ১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দেশটি চারটি অভ্যুত্থানের সম্মুখীন হয়, সেইসাথে অসংখ্য অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বাজুম গণতান্ত্রিকভাবে ২০২১ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ফ্রান্স এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলির ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত।