fbpx

নেপালের পাগলা মধু ,যা খেলে হয় হ্যালুসিনেশন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

মধু স্রষ্টার দান, বহুমুখী কর্মশক্তিসম্পন্ন একটি পণ্য। মধু’ নামটা শুনলেই মনে একটা মিষ্টি অনুভূতি আসে । এই মধু শুধু খেতে মিষ্টি তা নয় ,হাজার বছর ধরে মধু তার ঔষুধি গুনের জন্য সারা দুনিয়ায় জনপ্রিয় চিকিৎসাক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার যে ভাবে হয় আর কোনো খাদ্যদ্রব্যের সেভাবে হয় বলে মনে হয় না।নেপালের দুর্গম ভূপ্রকৃতি আর অনন্য জীববৈচিত্র্যের মাঝে এমন কিছু জিনিসের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। এমনই এক জিনিস হলো ‘পাগলা মধু’। হিমালয়ের দুর্গম পাহাড়ি উপত্যকায় বাস পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মৌমাছির। একেক ঋতুতে একেক রকম মধু সংগ্রহ করে এসব মৌমাছি। অনেকটা লালচে দেখতে এই মধুই পরিচিত ‘পাগলা মধু’ নামে।

নেপালের পাগলা মধু ,যা খেলে হয় হ্যালুসিনেশন

 

 

শুধু বসন্ত কালে রডোডেন্ড্রন নামের এক গাছের ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে এই মৌমাছি, এর মধুতে গ্রায়ানোটক্সিন নামক যৌগ থাকে।গ্রায়ানোটক্সিন থাকা মধু খেলে হ্যালুসিনেশন হতে পারে, মাত্র দুই চা-চামচ খেলেই গাঁজা সেবনের মতো অনুভূতি হতে পারে।

নেপালের পাগলা মধু ,যা খেলে হয় হ্যালুসিনেশন

রডোডেন্ড্রন ফুল

পাগলা মধু পান করলে মাথা ধরা ছাড়াও রক্তচাপ হ্রাস পাওয়া এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দন শুরু হতে পারে। যার ফলে মধু পানকারীর বমিবমি ভাব, অসাড়তা, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, সংজ্ঞা হারান এবং হঠাৎ স্ট্রোক হতে পারে। এমনকি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি মধু পানে মৃত্যুও হতে পারে। তবে সচরাচর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে না।

মৌমাছির চাক ভেঙে মধু তুলে আনা যে কত কঠিন কাজ, তা কমবেশি আমরা সবাই জানি। মানুষ তার জীবনকে তার প্রয়োজনের সাথে পাল্টেছে, বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষ অর্জন করেছে নানা কঠিন অভ্যাস। নেপালের চেস্কাম গ্রামের মৌয়ালরাও অভ্যেস করে ফেলেছে দুর্গম পাহাড়ের উঁচু থেকে মধু উদ্ধার করার কৌশল। গ্রামবাসীরা দল বেঁধে মধু সংগ্রহ করে, তাও বছরে মাত্র দু’বার। প্রায় ৩০ জনের মতো থাকে দলে। প্রত্যেকে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগে দেবী রাংকেমির কাছে প্রার্থনা করে। তাদের বিশ্বাস, তিনিই তাদের রক্ষা করবেন। এরপর খাড়া পাহাড় বেয়ে প্রায় চার ঘণ্টার যাত্রা। তারপর সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গা, যেখান থেকে শুরু হবে মধু সংগ্রহের প্রস্তুতি।

নেপালের পাগলা মধু ,যা খেলে হয় হ্যালুসিনেশন

এত বড় মৌমাছির আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য তাদের কাছে কোনো সুরক্ষাকারী পোশাক নেই। যে হাতের কাছে যেমন পোশাক পায়, তাই দিয়েই কাজ চালায়। অনেক গ্রীষ্মের গরমেও শীতের সোয়েটার আর ট্রাউজার পরে, কেউবা মশারি আর বাস দিয়ে হেলমেটের মতো বানিয়ে মাথা ও চোখ রক্ষা করে।

নেপালের পাগলা মধু ,যা খেলে হয় হ্যালুসিনেশন

মৌচাকের যত কাছে তারা পৌঁছায়, মৌমাছিরা তত আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। প্রত্যেকের ওপর এই তিন সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের মৌমাছিরা তাদের বিষাক্ত হুল নিয়ে আক্রমণ চালায়। এই অবস্থায় কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে সমুদ্রপৃষ্ঠে থেকে প্রায় হাজার ফুট ওপরে এক হাতে বাঁশ আর দড়ির মই ধরে এই মধু সংগ্রহের কাজ করা সম্ভব না হলেও , কুলুং উপজাতির লোকেরা অবলীলায় কাজটি করে যায়।

 

নেপালের পাগলা মধু ,যা খেলে হয় হ্যালুসিনেশন

 

পাগলা মধুর মাদকতার কথা হাজার হাজার বছর আগে থেকেই জানা যায়। ৬৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমান সেনা প্রধান পাগলা মধু পান করায় এশিয়ার মাইনরের রাজা মিথ্রিদাতেসের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। মিথ্রিদাতেস কৌশলে রোমান সৈন্যদের পাগলা মধু পান করান। এতে তাদের মাদকতা চলে আসে। সুযোগ বুঝে মিথ্রিদাতেস তাদের আক্রমণ করে পরাজিত করেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply