fbpx

বঙ্গোপসাগরে ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ছে প্রতি বছর

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

২০০৫ সাল পরবর্তী ১৫ বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার পাঁচ গুণ বেড়েছে। শুধু ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহার হয়েছে। প্রতি বছর বঙ্গোপসাগরে ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ছে। পৌরসভার ডাম্পিং ও পর্যটকদের প্লাস্টিক উচ্ছিষ্টের কারণে বন ও জলাভূমিতে দূষণ বাড়ছে।

গতকাল সকালে রাজধানীর পর্যটন ভবনে আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও ইনস্টিটিউশন অব ফরেস্টারস বাংলাদেশের (আইএফবি) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে এসব তথ্য জানানো হয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন, পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও প্লাস্টিক শিল্প স্থাপনের জন্য সহজেই ব্যাংক ঋণ পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু বায়োডিগ্রেডেবল উপাদান দিয়ে প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য তৈরি করতে গেলে কোনো ঋণ পাওয়া যায় না। ‌অর্থায়নের অভাবে বিভিন্ন সময়ে নেয়া পরিবেশবান্ধব শিল্পোদ্যোগগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে।

‘‌প্লাস্টিক পলিউশন ইন ফরেস্টস অ্যান্ড আদার ন্যাচারাল ইকোসিস্টেম: ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা দূষণ বন্ধে সুন্দরবন ও সেন্ট মার্টিনে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ জানান, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য দূষণ থেকে সেন্ট মার্টিনকে সুরক্ষায় নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব নীতি বাস্তবায়নে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

টেকসই উন্নয়নের তিনটি শর্ত ইন্ট্রা-জেনারেশন ইকুইটি, ইন্টার জেনারেশন ইকুইটি ও ট্রান্স-বাউন্ডারি ইকুইটির কথা মনে করিয়ে দিয়ে সচিব জানান, সরকার এখন সবুজ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। দূষণ ও অন্যান্য কারণে বাংলাদেশের বিপন্নপ্রায় প্রজাতিগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে তার মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে দাবি করেন ড. ফারহিনা আহমেদ।

অতিরিক্ত সচিব মো. ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, ‘‌প্লাস্টিক দূষণ কমাতে অবশ্যই সার্কুলার ইকোনমি বাস্তবায়ন করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে পরিবেশ সচেতন হিসেবে তৈরি করার নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ এছাড়া ভবিষ্যতে সবুজ শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে করছাড়সহ অন্যান্য প্রণোদনা দেয়ার ব্যাপারেও আশ্বাস দেন তিনি।

প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘‌পর্যটকদের কারণে সুন্দরবনের গহিনে প্লাস্টিক দূষণ শ্বাসমূলের নিঃশ্বাস প্রক্রিয়া ও বীজ থেকে নতুন চারা উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে শালবনও সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে।’

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে আরণ্যক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রকিবুল হাসান মুকুল। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইএফবির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‌প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে।’ দূষণ কমাতে সব ধরনের দায়িত্ব বণ্টন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের তাগিদ দেন তিনি। এর আগে সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসাইন ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক মোস্তফা ইউসুফ।

প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার এবং পর্যটন অনুরাগী ও উদ্যোক্তা অপু নজরুল।

Advertisement
Share.

Leave A Reply