বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিতে বিশ্বের ১১০ দেশ ৩০১টি সুপারিশ করেছে। বুধবার রাতে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ‘ইউনিভার্সেল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর)’ বা সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে প্রতিবেদনের খসড়া গৃহীত হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ পর্যালোচনাসভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিলেও সুপারিশমালা অনুমোদনের সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। জেনেভায় জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমান আইনমন্ত্রীর পরিবর্তে সভায় বক্তব্য দেন।
বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করা দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুফিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এসব সুপারিশ পর্যালোচনা করে তার সিদ্ধান্ত আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় মানবাধিকার পরিষদের ৫৫তম অধিবেশনের আগেই জানিয়ে দেবে।
এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— বহুল আলোচিত গুমবিষয়ক সনদ ও নির্যাতনবিরোধী সনদের অতিরিক্ত চুক্তি অনুমোদন, গুমের ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত এবং দোষীদের বিচার ও সাজার ব্যবস্থা করা।
সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলোপ ও সব ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া, সাইবার নিরাপত্তা আইনের সংশোধন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সভা ও সংগঠনের অধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, মানবাধিকার রক্ষী, নাগরিক সমাজ বা এনজিও সদস্যদের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ, নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধে আইন সংশোধন।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা, বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়ন, ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ঘোষণা, শ্রমিকদের আইএলও স্বীকৃত সব অধিকার নিশ্চিত করা ইত্যাদিও রয়েছে সুপারিশে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলোর পক্ষ থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, ভিন্নমত দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহি না থাকার বিষয়গুলোতে বেশি জোর দিতে দেখা গেছে।