fbpx

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী, মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

করোনার অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে বিদ্যুতের যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, সেটির ভার সবাই মিলে ভাগ করে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘সেখানে আমরা যদি একটু সাশ্রয় করে চলি, মিতব্যয়ী হই, এবং নিজেরা নিজেদের সঞ্চয়টা বাড়াতে পারি, তাতে যেকোনো সমস্যা মোকাবিলা করা যাবে।’

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদরদপ্তরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একদিকে করোনার একটা অভিঘাত, তার ওপরে এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। যার ফলে আজকে সমগ্র বিশ্বে যেমন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, অনেক দেশে এখন বিদ্যুতের জন্য হাহাকার। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাসসহ বিদ্যুৎ তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে পরিবহন ব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেই বিদ্যুতের জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, আর সেই ক্ষেত্রে আমি আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীকে অনুরোধ করব, বিদ্যুৎ আমরা সবার ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সবাই পাচ্ছিল। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যুত উৎপাদনের যে উপকরণগুলো আছে, সেগুলোর দাম অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। যেমন ডিজেলের দাম বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, এলএনজির দাম বেড়েছে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। কয়লা এখন প্রায় পাওয়াই যায় না।’

বিদ্যুৎ বিভাগ গত কয়েক বছরে লোডশেডিং শব্দটা ব্যবহার করত না। তারাই এখন লোডশেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আর না কেনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হবে জানিয়ে তিনি দুঃখও প্রকাশ করেছেন।

অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে কারণে সরবরাহ সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আগের মতো জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। বা সমস্ত উৎপাদন, আমাদের দেশে না সব দেশের প্রত্যেকটা জিনিসের এখন ঘাটতি, এই সমস্যাটা দেখা দিয়েছে।’

এসময় গত এক সপ্তাহ ধরেই সারা দেশেই বিদ্যুতের যাওয়া আসা বেড়েছে। রাজধানীতেও দিনে কয়েক ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং হচ্ছে। জেলা শহরগুলোতে সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লোগ সভানেত্রী বলেন, যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, সেটির ভার সবাই মিলে ভাগ করে নেয়ার অনুরোধও করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সেখানে আমরা যদি একটু সাশ্রয় করে চলি, মিতব্যয়ী হই, এবং নিজেরা নিজেদের সঞ্চয়টা বাড়াতে পারি, তাতে যেকোনো সমস্যা মোকাবিলা করা যাবে।’

অনেক উন্নত দেশে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জানিয়ে এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসী মিতব্যয়ী ও সঞ্চয়মুখী হওয়ার আহ্বানও রাখেন সরকারপ্রধান। সঞ্চয়ী হওয়া ও আবাদি জমিগুলোতে কিছু না কিছু পণ্য উৎপাদন করা হলে সংকট মোকাবিলা সম্ভব হবে বলেও মনে করছেন তিনি।

দুর্নীতির ‘মিথ্যে অভিযোগ’ এনে বাংলাদেশকে যারা হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছিল নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে তার ‘উপযুক্ত জবাব’ দেয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ, আমরা অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছি। নিজেদের টাকায় আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করে, বাংলাদেশকে যারা হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিল বা আমাকে, আমার পরিবারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে এবং আমার মন্ত্রী, সচিব, উপদেষ্টাকে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত করে যারা অসম্মান করতে চেয়েছিল, তার উপযুক্ত জবাব আমরা দিয়েছি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি শুধুই পদ্মাসেতু না, পদ্মা সেতু আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং আমরা যে একটা স্বতন্ত্র জাতিসত্তা সেই স্বতন্ত্র জাতিসত্তার সেটারই বহিঃপ্রকাশ। আর এই একটা সিদ্ধান্ত আজকে বাংলাদেশ সম্পর্কে সারা বিশ্ববাসীর মনোভাবও বদলে গেছে।’

যারা আগে মনে করত বাংলাদেশ শুধু ভিক্ষা চায়, অনুদান চায়, বাংলাদেশ হাত পেতে চলে, আজকে আমরা এটা প্রমাণ করেছি যে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জনকারী একটি দেশ এবং বাঙালি জাতি একটি জাতি, সে জাতি কারও কাছে মাথা নোয়াবে না, নোয়ায় না, কারও কাছে হাত পেতে চলবে না বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply