fbpx

ভবিষ্যৎ পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ ফাইভজির হাতে!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

পৃথিবীকে ফাইভজি কীভাবে বদলাতে পারে তার কিছুটা ঝলক দেখাতেই বিশ্ব প্রযুক্তির মোড়ল হিসেবে খ্যাত হুয়াওয়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের কুইন শ্রীকিট ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজন করেছে ১৩তম গ্লোবাল মোবাইল ব্রডব্যান্ড ফোরামের। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।

হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন হু’র মূল বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সোমবার ব্যাংককে শুরু হয় ‘হুয়াওয়ের ১৩তম গ্লোবাল মোবাইল ব্রডব্যান্ড ফোরাম (এমবিবিএফ)’। জিএসএমএ ও জিটিআই’-এর মতো ইন্ডাস্ট্রি পার্টনারদের সহযোগিতায় হুয়াওয়ে গ্লোবাল মোবাইল ব্রডব্যান্ড ফোরাম ২০২২ আয়োজন করে। বার্ষিক এই ফোরামে ফাইভ-জি’র বাণিজ্যিক সফলতা এবং গ্রিন ডেভেলপমেন্ট, ইন্টেলিজেন্স ও ফাইভ-জি’র বিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক ক্যারিয়ার, এ খাতের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং ইকোসিস্টেমের অংশীজনরা উপস্থিত হয়েছিলেন।

বক্তব্যের শুরুতে কেন হু বলেন, “মোবাইল প্রযুক্তির আগের যেকোনো প্রজন্মের তুলনায় ফাইভজি দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, মাত্র তিন বছরে নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, গ্রাহক সেবা ও শিল্পখাতে এর ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত  হয়েছে।”

কেন হু আরও বলেন, “ফাইভজি দ্রুত এগিয়ে চলছে এবং ফাইভজি’র এই অগ্রগতির জন্য আমাদের সবার গর্বিত হওয়া উচিত। কিন্তু এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। ফাইভজি নেটওয়ার্ককে পুরোপুরি ব্যবহার করতে হলে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে এবং ক্লাউড ও সিস্টেম ইন্টিগ্রেশনের মতো সেবার পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা সবাই মিলে ফাইভজি নেটওয়ার্ক, অ্যাপ্লিকেশন ও সর্বোপরি এই খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবো।”

ভবিষ্যৎ পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ ফাইভজির হাতে!

সম্মেলনে হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ২৩০টিরও বেশি ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি সেবা চালু করেছে। সব মিলিয়ে, এই খাতে ৭০ কোটির বেশি গ্রাহকের জন্য ৩০ লাখের বেশি ফাইভজি বেইজ স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

টেলিযোগাযোগ খাতে, বেশিরভাগ ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠানের মূল রাজস্ব আয় হয় গ্রাহক সেবা থেকে। সব জায়গায় ফাইভজি’র বিস্তৃতির মাধ্যমে সার্বজনীন অভিজ্ঞতা গ্রাহকদের চাহিদা পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করছে, পাশাপাশি হাই-ডেফিনেশনের ভিডিও ট্রাফিক বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখছে। মোবাইলের নতুন অ্যাপ্লিকেশন, যেগুলো ফাইভজি প্রযুক্তির উন্নত স্পিড ও লোয়ার লেটেন্সি সুবিধা কাজে লাগিয়েছে, সেসব অ্যাপ্লিকেশনে গড় ইউজার ডেটা কনসাম্পশন (ডিওইউ) দ্বিগুণ হয়েছে, যা গড় রেভিনিউ পার ইউজার (এআরপিইউ) ২০-৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে কানেক্টিভিটি থেকে প্রাপ্ত ক্যারিয়ার রেভিনিউয়ের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।

ভবিষ্যৎ পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ ফাইভজির হাতে!

একইসাথে, ক্যারিয়ারের রাজস্বের প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বিটুবিতে (বিজনেস-টু-বিজনেস) ফাইভজির ব্যবহার, যা তেল-গ্যাস, উৎপাদন এবং যোগাযোগ খাতের অভুতপূর্ব উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।

পাশাপাশি ক্যারিয়ারের জন্য বাণিজ্যিক মূল্য বৃদ্ধি তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০২১ সালে চীনা ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ হাজারেরও বেশি ফাইভজি প্রকল্প থেকে ৩.৪ বিলিয়ন চাইনিজ ইউয়ান (প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) নতুন রাজস্ব আয় করেছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এই প্রকল্পগুলো থেকে সংশ্লিষ্ট ডেটা ও আইসিটি সেবাখাতের চেয়ে ১০ গুণ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।

বিটুবিতে ফাইভজির ব্যবহারকে ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে দ্রুতবর্ধনশীল রেভিনিউ খাত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নতুন নতুন সেবা, অ্যাপ্লিকেশন ও বিজনেস মডেল প্রতিষ্ঠা করছে ফাইভজি, যা এই খাতে সুযোগ বৃদ্ধির উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

হুয়াওয়ে’র রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন হু এই বিষয়ে বলেন, “এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হলে আমাদের বেশ কিছু কাজ করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কভারেজ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি, নেটওয়ার্ক এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তা বিভিন্ন রকম ব্যবহারকারীর জন্য সর্বোচ্চ সেবা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, চীনা ক্যারিয়ারগুলো প্রথম ইনপুট দেয়ার ক্ষেত্রে দেরি করা ৫০ শতাংশ ও ফ্রেম ফ্রিজ হয়ে যাওয়া ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনার মাধ্যমে টিকটক ও অন্যান্য জনপ্রিয় ভিডিও সার্ভিসের নেটওয়ার্ককে অপটিমাইজ করেছে। চমৎকার ভিডিও অভিজ্ঞতা ফাইভজি সেবার দিকে নতুন ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করেছে পাশাপাশি ভিডিও দেখার হারকে দ্বিগুণ করেছে।

ভবিষ্যৎ পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ ফাইভজির হাতে!

ফাইভজি সেবাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে ক্যারিয়ার ও এই খাতের সহযোগীদের সাথে কাজ করে যাচ্ছে হুয়াওয়ে। ফাইভজি প্রযুক্তির বিবর্তন হিসেবে ৫.৫জি’র চারটি ফিচার প্রস্তাব করেছে হুয়াওয়ে। সেগুলো হলো- ১০ জিবিপিএস ডাউনলিঙ্ক, ১ জিবিপিএস আপলিঙ্ক, ১০০ বিলিয়ন সংযোগে সহায়তা এবং নেটিভ ইন্টেলিজেন্স।

কেন হু বলেন, “মানদণ্ড নির্ধারণ, তরঙ্গ প্রস্তুত করা এবং ইকোসিস্টেম তৈরি করার ক্ষেত্রে এ খাত সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

বিশাল ব্যান্ডউইথ ও কম লেটেন্সির কারণে ক্লাউড ও এআইয়ের (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) সাথে ফাইভজি’র সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সেবার খাত তৈরি করা সম্ভব হবে। এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটি (এক্সআর), ক্লাউড গেমিং, গ্রাহকদের জন্য উন্নত কল সেবা এবং ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সল্যুশনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ উদ্যোগ নিশ্চিত করার মতো নতুন নতুন অভিজ্ঞতা প্রদানে সক্ষম হবে ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো। এই বিষয়গুলো নতুন আয়ের খাত তৈরি, কানেক্টিভিটির বাইরেও ক্যারিয়ারের জন্য সুযোগ তৈরি এবং ক্লাউড সেবা ও সিস্টেম ইন্টেগ্রেশনের এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে গতিশীল করবে।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি ডিজিটালাইজেশন। ডিজিটাল রূপান্তরের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ফাইভজি সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। কিন্তু এসব বিষয়ের বেশিরভাগ অর্জন করার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

কেন হু এই বিষয়ে বলেন, “আমরা যদি একযোগে কাজ করি তাহলে ফাইভজি নেটওয়ার্ক, অ্যাপ্লিকেশন এবং সব মিলিয়ে এই খাতের উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত করতে সক্ষম হবো।”

Advertisement
Share.

Leave A Reply