fbpx

মানব পাচারের নতুন হাতিয়ার ফেসবুক, টিকটক

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির ব্যবহার সম্প্রসারণের ফলে মানব পাচার সাইবার স্পেসে স্থানান্তরিত হয়েছে। করোনা মহামারী ও দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রম অনলাইন প্লাটফর্মে রূপান্তরের কারণে মানব পাচার আরো ত্বরান্বিত হয়েছে। ফেসবুক, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানব পাচার বেড়েছে। মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়া অপরিহার্য।

গতকাল ‘আন্তর্জাতিক মানব পাচার প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে আইওএম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে কভিড-১৯-এর প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক মানব পাচারের প্রবণতা, পরবর্তী পরিস্থিতি এবং সাইবার স্পেসে মানব পাচারের বিষয়ে আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক অংশীদার, বেসরকারি খাত এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, এবারের বিশ্ব মানব পাচার প্রতিরোধ দিবস ২০২২-এর প্রতিপাদ্য ‘প্রযুক্তির ব্যবহার এবং অপব্যবহার’। এ প্রতিপাদ্যে প্রযুক্তির ভূমিকার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার মানব পাচার বাড়াতে বা মোকাবেলা করতে পারে। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ইউএন নেটওয়ার্ক অন মাইগ্রেশনের ‘কাউন্টার ট্রাফিকিং ইন পারসনস টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ’ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং অপব্যবহারের প্রেক্ষাপটে মানব পাচার প্রতিরোধ বিষয়ে একটি জাতীয় পরামর্শ সভার আয়োজন করে।

বাংলাদেশ মানব পাচারের ক্ষেত্রে উৎস, ট্রানজিট ও গন্তব্য দেশ। যদিও বাংলাদেশ মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ট্রাফিকিং ইন পারসনস প্রতিবেদন ২০২২ অনুয়ায়ী টায়ার ২-এ অবস্থান করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মানব পাচার দমন ও প্রতিরোধে অনেক ভালো উদ্যোগ নিয়েছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মানব পাচার একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এ বিষয়ে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। আমরা এ ভয়াবহ অপরাধের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছি। পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সব পক্ষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। মানব পাচার প্রতিরোধে অনলাইনে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকার কাজ চালিয়ে যাবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে মানব পাচার একটি আন্তঃসীমান্ত বা আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ। পাচারকারীরা একটি নির্দিষ্ট দেশে প্রযুক্তির ব্যবহারে ভালো হতে পারে এবং তাদের কাছে উন্নত প্রযুক্তি থাকতে পারে। প্রযুক্তির মাধ্যমে মানব পাচারকারীরা আরো বেশি ক্ষতি করে। তবে সরকারি সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে পাচারকারীর প্রচেষ্টাকেও প্রতিহত করতে পারে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ সরকারের যথেষ্ট আইন ও নীতি রয়েছে। অভিবাসনসংক্রান্ত গ্লোবাল কমপ্যাক্ট মানব পাচার নির্মূল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধীরা মানব পাচারের কার্যক্রম জোরদার করছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পাচারকারীরা সহজে ভুক্তভোগীদের পরিবহন, বাসস্থান, বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রলোভন দেখানো এবং অন্য পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগেও প্রযুক্তির সহযোগিতা নিচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাচারকারীরা পরিচয় গোপন করছে। দ্রুতগতিতে এবং অল্প খরচে যোগাযোগ করতেও প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে তারা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, আইওএম বাংলাদেশের মিশন প্রধান ও বাংলাদেশ ইউএন নেটওয়ার্ক অন মাইগ্রেশনের সমন্বয়কারী আবদুসাত্তর এসয়েভ, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স জেরেমি ওপ্রিটেসকো বক্তব্য রাখেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply