বিয়ে করা বা না করা যতটা না নিজের ইচ্ছা – অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে তার থেকেও যেনো এটা একটি সামাজিক রীতি হয়ে উঠেছে। নিজের ইচ্ছার বাইরেও অনেকে পারিপার্শ্বিক কারণে বিয়ে করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রেসহ বিশ্বব্যাপী যেভাবে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে তাতে করে অনেকেই ভাবছেন বিয়ে করা বা বিয়ের জন্য খরচ করা অর্থনীতির জন্য ভালো কিছু নয়।
এই ভাবনার বেশিরভাগ জেন–জি (জন্ম ১৯৯৭-২০১২) ও মিলেনিয়াল প্রজন্ম (জন্ম ১৯৮১-১৯৯৬)।
সম্প্রতি থ্রাইভিং সেন্টার অব সাইকোলজি পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৪৫ বছরের কম বয়সী মানুষের বিয়ে করার ক্ষেত্রে সাধ্যের বিষয়টি মূল বিবেচনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত জুন মাসে জেন–জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের ৯০৬ জন মানুষের ওপর এক জরিপ চালিয়েছে থ্রাইভিং। এই ৯০৬ জনের বয়স ১৮ থেকে ৪২ বছর। তাঁরা সবাই কারও না কারও সঙ্গে সম্পর্কিত, কিন্তু অবিবাহিত।
এদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ বলেছেন, অর্থনীতির বর্তমান যে হালহকিকত, তাতে বিয়ে করা খুবই ব্যয়বহুল; অর্থাৎ তাঁরা এই বাস্তবতায় বিয়ে করতে আগ্রহী নন।
২০২২ সালের জুন-জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে যায়। এরপর ধারাবাহিকভাবে এক বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে; অর্থনীতিও স্থিতিশীলতা ফিরে পেয়েছে, বেকারত্ব কমেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ১৮ থেকে ৪২ বছর বয়সী মানুষ নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত।
বিয়ের খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণও আছে।যুক্তরাষ্ট্রে গড়পড়তা বিয়ের আয়োজন করতে ২০২২ সালে ৩০৯ হাজার ডলার ব্যয় হয়েছে। আগের বছরের চেয়ে যা দুই হাজার ডলার বেশি।দ্য নটের জরিপে দেখা গেছে, নিউইয়র্ক, বোস্টন ও সান ফ্রান্সিসকোর মতো বড় শহরে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনে গত বছর ৫০ হাজার ডলারের বেশি ব্যয় হয়েছে।
এ বাস্তবতায় অনেক জুটিই মনে করছেন, এত অর্থ ব্যয় করে বিয়ে করার অর্থ হয় না। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে পরিবর্তন আসবে; ৪০ বছর বয়সী মানুষের বড় একটি অংশ কখনোই বিয়ে করবেন না।
তবে বিষয়টি শুধুই খরচের চিন্তা করেই ভাবা হচ্ছে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পর্কের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগের কারণেও জেন–জি ও মিলেনিয়ালদের অনেকে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়াতে চান না। সেই সঙ্গে আছে সামাজিক প্রত্যাশার চাপ।
বিয়ে না করার কারণে এঁরা সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন নিজের ঘরে, বিশেষ করে মায়েরা এ বিষয়ে সমালোচনাপ্রবণ। ৬৯ শতাংশ নারী ও ২৭ শতাংশ পুরুষ বলেছেন, বৈবাহিক অবস্থা নিয়ে তাঁদের মায়েরা সবচেয়ে বেশি সমালোচনাপ্রবণ।