fbpx

মেয়ের জন্য আরো বাঁচতে ইচ্ছে করে আসিফের

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

মানুষের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির জীবনে যোগ-বিয়োগের খেলায় চলে অবিরত যেখানে পরিবার মুখ্য ভূমিকা পালন করে। গায়ক আসিফ আকবরের জীবনও তার বাইরে নন। এই গায়ক বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন, একটা সময় পর্যন্ত ইচ্ছেমত জীবন যাপন করলেও এখন তার জীবনাচারণ বেশ নিয়ন্ত্রিত এবং এর প্রধান কারণ হিসেবে তিনি মেয়ে আইদাহ আসিফ রঙ্গনের কথাই বলেছেন বারবার। এবার বললেন, এই মেয়ের জন্যই আরো বাঁচতে ইচ্ছে করে আসিফের। জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

৩ মার্চ একটি ফেসবুক পোস্টে আসিফ লিখেছেন, ‘অনেকদিন পর কুমিল্লা গিয়ে বেশ কয়েকদিন থাকলাম। বন্ধু মাসুদ আলীর প্রয়ানে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত আমরা। ঢাকার সব কাজ বন্ধ করে আড্ডার বন্ধুদের সাথে সময়টা কাটানো ছিল একধরনের মানসিক প্রশ্বস্তি খোঁজা। মন খারাপের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাওয়াটা কারো জন্যই সুখকর নয়। একসাথে থাকতে পারলে অনেক শেয়ারিং হয়, অনিবার্য কষ্টবোধ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়। ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি পরিবারে কোন মুরুব্বী মারা গেলে সিনিয়র সদস্যরা সবাইকে নিয়ে বসে অতীতের মজার সুখের সংগ্রামের গল্প করতেন। সেখানে উপস্থিত মনযোগী কয়েক প্রজন্ম সেই গল্পগুলোকে নিজেদের পরবর্তী জীবনে পথ চলার দীক্ষা হিসেবে নিতে পারে।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘গতকাল দুপুরে ড্রাইভ করে ঢাকায় ফিরেছি। সামনের সীটে ছোট্ট রঙ্গন নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে তার মায়ের কোলে, পেছনের সীটে রঙ্গনের কেয়ারটেকার সাহারাও ঘুমে নিমগ্ন। বেগমের সতর্ক চোখও বুঁজে আসছে খানিক পরপর, সে জানে চালকের পাশের সীটে ঘুমিয়ে যাওয়া অপরাধ। হাইওয়েতে গাড়ী চলছে আস্তেধীরেই, আমার মাথায় বিগত জীবনের স্মৃতিগুলোর ফ্ল্যাশব্যাক হচ্ছে কোটি কোটি মাইল স্পীডে। এই দুনিয়ায় এসে কাটিয়ে দেয়া সময়গুলোর রোমন্থনে মন আজ শান্ত, অনেক পাওয়া আর হারানোর অসীম হিসেব নিকেশ থেকে মুক্ত। পরিবারের সদস্যদের নিশ্চিন্তে ঘুমানোর ব্যবস্থা করতে পারাটাই প্রতিটি বাবার জীবনের আসল প্রশান্তি, দুনিয়ার হাজারো কঠিন বাস্তবতা সেখানে হার মেনে যায়।’

এরপর আসিফ লিখেছেন, ‘একান্নো বছরে এসে এখন আইদাহ্’র জন্য আরো বাঁচতে ইচ্ছে করে, হায়াতের মালিক আল্লাহ। সব নির্দিষ্ট জেনেও এই আকুতি থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ নেই কোন বাবার। দুনিয়ার হাটবাজারে লোভ স্বার্থ পরচর্চায় ব্যস্ত থেকে মানবজীবনের মর্ম বোঝা সহজ কাজ নয়, তবুও আমরা অন্যকে ঠকানো বা ছোট করার মিশনে ব্যস্ত। আত্মপোলদ্ধির সময় ক্রমশ শেষ হয়ে আসে, দুনিয়ার কাজ বাকী থেকে যায়। মেয়ের বাবা আর বাবার মেয়ে সম্পর্কটা খুব অদ্ভূত রকমের শক্তিশালী। আমার একরোখা জীবনে ফুলস্টপ দিয়ে দিয়েছে ছোট্ট রঙ্গন, বদলে ফেলেছি নিজেকে। টরন্টোতে বড় ছেলের সাথে প্রতিদিনই ম্যাসেজে কথপোকথন হয়, ছোটজনও যথেষ্ট  দায়িত্বশীল, তাদের প্রতি কোনও অভিযোগ নেই আমার। এদিকে মাসুদ আলীর পথচলা থেমে গেছে, তাঁর স্ত্রী আর দুটো শিশু মেয়ের দিন এখন কাটছে কিভাবে! এই উৎকন্ঠার মাঝেই আমার পৃথিবী ঘুরছে রঙ্গনের কক্ষপথে, পৃথিবীর সব রঙ্গনই খুব মায়াবতী, আমার রঙ্গনও ঠিক তেমনই।’

Advertisement
Share.

Leave A Reply