দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল স্থগিতের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে ২০১৮ সালের নির্বাচনের ভোটের প্রসঙ্গ টানেন আবেদনকারী আইনজীবী। এ সময় আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, ভোট যে রাতে হয়েছে বলছেন—কোনো মামলা হয়েছে কি না, দেখান। এ ধরনের কোনো ডকুমেন্ট (নথি) আছে কি না, দেখান। আদালত প্রমাণ চায়। এখানে শুধু বললেই দিলেই হবে না।
শুনানির এক পর্যায়ে রিটকারী আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচনে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলাম। রাতে ভোট হয়েছে।’
আইনজীবীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বলেছেন, এসব বক্তব্য রাজনৈতিক মঞ্চে দেবেন। আদালতে প্রমাণ ছাড়া কথা বলবেন না। রাতে ভোটের বিষয়ে কি কোনো মামলা হয়েছে। কোনো প্রমাণ থাকলে দেখান। ধারণা বা অনুমানের ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের বক্তব্য দেবেন না।
আদালত আরও বলেন, রাতে ভোটের বিষয়ে বক্তব্য নেতারা সংসদে বা বাইরে দিতে পারেন। বাইরে বক্তব্য আর সংবিধানের সঙ্গে সামজ্ঞস্য রেখে বক্তব্যে দেওয়া এক নয়। তখন ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, ‘মামলা তো ট্রাইব্যুনালে হয়। রাতে যে ভোট হয়েছে সাক্ষী আমি ও ১৮ কোটি জনগণ।’ তখন আদালত বলেন, রাতের ভোটের অভিযোগ প্রমাণে সাক্ষ্যপ্রমাণ ও ১৮ কোটি সাক্ষী হাজির করেন। যেদিন ১৮ কোটি সাক্ষীকে হাজির করতে পারবেন, সেদিন পর্যন্ত আমরা আপনার রিট আবেদন স্থগিত রাখব।
এ পর্যায়ে সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ ও একাধিক রায় তুলে ধরে রিটটি ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত বলে উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিট আবেদনকারীকে দৃষ্টান্তমূলক জরিমানা করার দাবি জানান তিনি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রিটের আদেশের জন্য ১০ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
একটি সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় আরেকটি সংসদ নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বুধবার রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী। রিট আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিবসহ ৭ জনকে বিবাদী করা হয়।