হল থেকে পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হামলার ঘটনায় তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন ও দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাসে মধ্যরাতে হাসপাতাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ইন্টার্নরা যোগ দিয়েছেন কাজে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাতের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাত ১১টার দিকে রামেক হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, পুলিশ প্রশাসন ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে যৌথ সমঝোতা বৈঠকে বসেন। প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাক্তার নওশাদ আলীকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে চিকিৎসকদের দু’জন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন এবং পুলিশ প্রশাসনের দু’জনকে সদস্য করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি ঘটনার অনুসন্ধান করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে বলে জানানো হয়েছে। কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর রাত দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বুধবার রাত আটটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় ব্লকের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে যান শাহরিয়ার। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার মৃত্যু হয়। নিহত শাহরিয়ার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। তিনি শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
এরপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি সময়মতো আইসিইউ না পাওয়ায় এবং চিকিৎসা অবহেলায় শাহরিয়ারের মৃত্যু হয়েছে। কিন্ত এর প্রতিবাদ করায় চার শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মচারীরা। তাদের মহানগরীর বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে নয়টা থেকে ক্যাম্পাস উত্তাল ওঠে। পাশাপাশি হাসপাতালের পরিবেশও বেশ গরম হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে জড়িত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। অন্যদিকে, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ এনে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেবা বন্ধ করে হাসপাতাল থেকে চলে যায়।