এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) কমে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে।
রবিবার দিন শেষে দেশের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি ডলার। গত বুধবার দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
রিজার্ভ কমে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে ডলারের ওপর। ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১০৫ থেকে ১০৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলাবাজারে ডলারের দর ১২০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখনও ১১২ থেকে ১১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, দেশের ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। করোনার প্রভাব শুরুর আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামা করছিল।
জানা গেছে, ২০২২ সালে রিজার্ভ থেকে মোট ১২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এর বিপরীতে বাজার থেকে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকার বেশি তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে অভ্যন্তরীণ তারল্যের ওপর চাপ বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, গত অক্টোবর মাসে মোট ৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এ হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি বিল মেটানো সম্ভব।
উল্লেখ্য, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে আন্ত-আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে এশিয়ার নয়টি দেশের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানি হয়, তা দুই মাস পরপর নিষ্পত্তি হয়। তবে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। আকুর সদস্যদেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।