fbpx

শিশুর শ্বাসকষ্ট নিয়ে অবহেলা নয়, ছুটতে হবে চিকিৎসকের কাছে

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে ১৪ দিন ধরে ভর্তি ছয় মাস ১০ দিন বয়সী ধামরাইয়ের সৃজন ঘোষ। হাসপাতালে ভর্তির আগের একমাস ভুগেছে শ্বাসকষ্টে, তার মধ্যে ১৪ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে নিউমোনিয়া। এন্টিবায়োটিক, নেবুলাইজারসহ চলছে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা। সৃজনের মা জানালো, খেতে গেলেই গলায় খাবার আটকে কষ্ট হয়, নিঃশ্বাস নিতে পারে না, থেকে থেকে কাশি হয়েই যাচ্ছে।

সৃজনের মতো ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে নিউমোনিয়া আক্রান্ত বেশ কয়েকজন শিশু। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকের ওঠানামাসহ বেশকিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে তাদের। আইইডিসিআর এর গবেষণা অনুযায়ী দেশে প্রতি বছর ২৪ হাজারের বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘শীত এলেই শিশুদের নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের হার সবেচয়ে বেশি। দেশে এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণও নিউমোনিয়া। কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, অরুচি, বমি, খিঁচুনি, নিস্তেজ হয়ে যাওয়া, নিঃশ্বাসের সাথে বুকের অস্বাভাবিক ওঠানামা দেখা মাত্রই নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র অথবা চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।‘

ফুসফুসে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে নিউমোনিয়া হয় জানিয়ে ডা. প্রবীর কুমার বলেন, ‘অপরিণত বয়সে জন্ম নেওয়া, অপুষ্টিতে ভোগা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকা, গৃহস্থলী দূষণ ও বায়ু দূষণকে দায়ী করা হয় নিউমোনিয়ার কারণ হিসেবে। এছাড়া খাবার খাওয়ার সময় তা ফুসফুসে চলে গেলেও তা থেকে নিউমোনিয়া হতে পারে। নিউমোনিয়ার যেকোন লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেই আমরা। কারণ, যত দ্রুত রোগীকে চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে, ততদ্রুত শিশু সেরে ওঠার সুযোগ থাকে। দেরি হওয়া মানেই শিশুর স্বাস্থ্য খারাপের  দিকে যেতে থাকা, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়তে থাক তাতে।‘

বাংলাদেশে নিউমোনিয়ার আছে উন্নত চিকিৎসা। তবে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে টিকা নেওয়ার পরামর্শ তাদের। গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও নিউমোনিয়ার টিকা পাওয়া যায়। সরকার বিনামূল্যে নিউমোনিয়ার টিকা দিয়ে থাকে নবজাতকদের। তাই শিশুদের বয়সভেদে সবধরণের টিকা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

নিউমোনিয়া রোধ করতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কোন বিকল্প নেই। একইসঙ্গে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো, দুই বছর পর্যন্ত শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানো, রান্নাঘর বা রান্নাঘরের আশেপাশে শিশুকে না রাখা, সব ধরণের টিকা নিশ্চিত করা, যারা শিশুর দেখাশোনা করেন, তাদেরকে পরিচ্ছন্ন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ শিশু বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement
Share.

Leave A Reply