fbpx

সাত মাসে ‘টিকটক ভিডিও’ বানাতে গিয়ে দশজনের মৃত্যু

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

চলতি বছর জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে ভিডিও নির্মাণ করতে গিয়ে দশজন তরুণ-তরুণী প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এ তথ্য জানায়।

যেখানে বলা হয়, গত কয়েক বছর ধরে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও নির্মাণ অ্যাপ টিকটক এর অপব্যবহার এতটা বেড়েছে, যে বর্তমান প্রজন্মের তরুণ তরুণীদের মধ্যে মৃত্যু ফাঁদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এই অ্যাপ।

একইসঙ্গে টিকটকের ‘ব্ল্যাক-আউট চ্যালেঞ্জ’-এর প্ররোচনায় টিকটক তৈরি করতে গিয়ে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা মৃত্যুর মুখে পড়ছে কি না তাও তদন্তের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

প্রসঙ্গত, ব্ল্যাক-আউট চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এমন ধরনের অপশন, যেখানে তরুণ-তরুণীকে তার বেল্ট, অথবা অন্য কোনও মাধ্যম ব্যবহার করে ফাঁসিতে ঝুলতে বা আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ জুলাই নোয়াখালীর চাটখিলে টিকটক ভিডিও বানানোর সময় অসাবধানতাবশত পা পিছলে গেলে সানজিদা আক্তার নামে (১১) বছর বয়সী এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। গত ১১ জুলাই কুমিল্লায় চলন্ত ট্রেনের ছাদে টিকটক করতে গিয়ে পা পিছলে মেহেদী হাসান (১৫) নামের কিশোরের মৃত্যু হয়।

গত ২ মার্চ রাজবাড়ী জেলার কালোখালি উপজেলায় হোসেন (১৬) নামের এক কিশোর রেল ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে টিকটক বানাতে গিয়ে রেলের নিচে কাটা পড়ে মারা যায়। ৮ মে নড়াইলের কালিয়ায় টিকটক করতে বাধা দেওয়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করে সুমি আক্তার (১৯)। ১৬ মে হৃদয় (১৫) নামে এক কিশোর নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে টিকটক বানাতে গিয়ে কাটা পড়ে। জানা যায়, হৃদয় টিকটক ভিডিও করছিল রেল লাইনে দাঁড়িয়ে। ২২ মে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভিডিও বানাতে গিয়ে নদীতে ডুবে মৃত্যু হয় মুস্তাকিম ইসলাম (১৬) নামে এক কিশোরের। এ বছরের ৫ জানুয়ারি মোটরসাইকেল চালিয়ে টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভার মেয়রের ছেলে।

২০২১ সালের ২০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে টিকটিক ভিডিও বানাতে গিয়ে নির্মাণাধীন তিন তলা ভবনের ৭ তলা থেকে পড়ে অনিল (১৪) বয়সী এক কিশোর এর মৃত্যু হয়। এছাড়া ২০১৯ সালের মার্চ মাসে টিকটক ভিডিও আপলোডকে কেন্দ্র করে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আরাফাত খুন হয়। নারায়ণগঞ্জে টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক তরুণের। টিকটক হ্যাংআউটে যোগাযোগ, তারপর ভারতে তরুণী পাচারের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তরুণ তরুণীদের মৃত্যুর দায়ভার কোনভাবেই টিকটক কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যেতে পারে না। এর দায়ভার তাদেরকে নিতে হবে।

গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এতো তরুণ তরুণীর মৃত্যুর কারণ টিকটক হলেও এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো বাংলাদেশি অভিভাবক মামলা করেনি। টিকটক বাংলাদেশের লাইসেন্সধারী কোন প্রতিষ্ঠান নয়। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে অথচ সরকার এই প্লাটফর্ম থেকে কোন প্রকার রাজস্ব পায় না।

আমাদের দাবি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে বা কমিশনের কোন সদস্যকে বা সচিবকে সদস্য করে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে টিকটক এর বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। শুধু তাই নয়, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে করে এই প্লাটফর্ম বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও মনে করছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply