fbpx

সাধারণ পরিবার থেকে যেভাবে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন লতা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

গানের পাখি লতা মঙ্গেশকর ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে জন্মেছিলেন। ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি তাঁর বিশেষ ঝোঁক ছিল। কিন্ত আশপাশটা লতার অনুকূলে ছিল না।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে মাথার উপর থেকে বাবার ছায়া সরে যায়। ১৯৪২ সালে লতার বাবা দ্বীননাথ মঙ্গেশকর হৃদরোগে মারা যান। ফলে সম্পূর্ণ পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে লতার উপর।

ঠিক এসময় দেবদূত হয়ে লতার জীবনে আসেন পরিবারের বন্ধু নবযুগ চিত্রপট চলচ্চিত্র কোম্পানির মালিক মাস্টার বিনায়ক। তিনি এমন পরিস্থিতিতে লতার পরিবারের পাশে সার্বক্ষণিক ছায়া হয়ে পাশে থাকেন।

ছোটবেলায় মাঝে মাঝে চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন লতা। গান আর অভিনয়কে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে শিখিয়েছিলেন মাস্টার বিনায়ক। মারাঠী চলচ্চিত্রে গাওয়া তার গান ‘খেলু সারি মানি হাউস ভারি’ চলচ্চিত্রের ফাইনাল কাট থেকে বাদ পড়ে যান লতা। তবুও হার মানেন নি।

সাধারণ পরিবার থেকে যেভাবে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন লতা

মাস্টার বিনায়ক তার চলচ্চিত্র ‘পাহিলি মঙ্গলা-গৌর’ এ লতার জন্য ছোট একটি চরিত্র বরাদ্দ করেন। এই চলচিচ্চত্রে তিনি দাদা চান্দেকারের রচনা করা গান ‘নাটালি চৈত্রাচি নাভালাল’ এ কণ্ঠ দেন। বসন্ত যুগলকরের ‘আপ কি সেবা ম্যায়’ চলচ্চিত্রে ‘পা লাগো কার জোরি’ গানটি তার প্রথম হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্রে গাওয়া গান।

কিন্ত মাস্টার বিনায়ক হঠাৎ করেই মারা যান। এরপর সঙ্গীত পরিচালক গুলাম হায়দার শিষ্য হিসেবে লতাকে স্বীকৃতি দেন। তাঁর হাত ধরেই ‘মজবুর’ (১৯৪৮) চলচ্চিত্রে ‘দিল মেরা তোড়া, মুঝে কাহি কা না ছোড়া’ গানটি গাওয়ার সুযোগ আসে লতার জীবনে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি লতাকে। বলিউড ইন্ডাস্ট্রি নতুন এই গায়িকাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়।

এরপর নামী দামী সব পরিচালকরা তাদের ছবিতে লতাকে দিয়ে গান গাওয়ানো শুরু করেন। পঞ্চাশের দশকেই নামীদামী সব সঙ্গীত পরিচালকদের সাথে কাজ করেন লতা। ষাটের দশকে ‘পিয়ার কিয়া তো ডারনা কিয়া’ বা ‘আজিব দাসতা হ্যায় ইয়ে’ এর মতো সব বিখ্যাত গানে কণ্ঠ দেন।

লতা তাঁর সঙ্গীত জীবনে প্রায় সাড়ে সাত হাজার গান গেয়েছেন। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে সঙ্গীতের ইতিহাসে গান রেকর্ডের দিক থেকে যা দ্বিতীয়। প্রায় ১০ হাজার গান রেকর্ড করে প্রথম স্থানে আছেন তাঁরই ছোট বোন আশা ভোসলে।

সাধারণ পরিবার থেকে যেভাবে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন লতা

প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান করেছেন এই সঙ্গীতশিল্পী। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানও রয়েছে তার দখলে।

গানের জগতে তিনি এতোটাই মগ্ন ছিলেন যে বিয়ে করার ফুসরত মেলে নি তাঁর। কারণটাও নিসংকোচে সবাইকে জানিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাবাকে হারানোর পর তাঁর কাঁধে ছিল পরিবারের সকল সদস্যের দায়িত্ব। এমন পরিস্থিতিতে বিয়ের চিন্তা এলেও সেটাকে গুরুত্ব দেয়ার কথা ভাবতেই পারেননি তিনি।

সঙ্গীতকেই জীবনের  একমাত্র অবলম্বন বেছে নেন লতা মঙ্গেশকর।

কিংবদন্তী সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর আর নেই

লতার স্মরণে শ্রদ্ধায় বাংলাদেশি তারকারা

Advertisement
Share.

Leave A Reply