fbpx

হামাসের অত্যাধুনিক আক্রমন কৌশল

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

প্রথমে ড্রোন ব্যবহার করে ইসরাইলের সীমান্ত বেড়া সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষণ টাওয়ার এরপর যোগাযোগ অবকাঠামো এবং তারপর অস্ত্রাগারে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে হামাস। এরপর হামাসের যোদ্ধারা ফ্যান-চালিত হ্যাং গ্লাইডারে করে সীমান্ত পার হয়েছে। ছিল আরো নানা কৌশল।

ইসরায়েলের অপ্রতিরোধ্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে এভাবেই ফাঁকি দিয়ে হামলায় হামাস যে কৌশল ব্যবহার করেছে, তা এখন পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে অত্যাধুনিক কৌশল। এ কারণে বিভিন্ন মহল থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, হামাস কি ইসরায়েলের থেকেও অত্যাধুনিক কৌশল রপ্ত করে ফেলেছে?

বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে, হামাস  সুড়ঙ্গ অবকাঠামোতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। ইসরায়েলি চেকপয়েন্টগুলো অতিক্রম করে আচমকা আক্রমণ চালানোর জন্য তারা ভূগর্ভস্থ পথগুলোর একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
হামাস তাদের হামলায় আকাশ, সমুদ্র এবং স্থলপথ ব্যবহার করে, যা সামরিক পরিভাষায় মাল্টি-ডোমেন অপারেশন হিসেবে পরিচিত। ইসরায়েলি ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক রকেট হামলার আগে ড্রোন ব্যবহার করে তাদের পর্যবেক্ষণ চৌকিতে প্রাথমিক হামলা চালিয়েছিল তারা।

এগুলোকে শেপিং অপারেশন বলা হয়, যা ছিল ইসরায়েলের মাটিতে হামাস সদস্যদের প্রবেশের জন্য পূর্ব প্রস্তুতি। এবং হামাস এমন এক সময় এ হামলার পরিকল্পনা করে যখন ইসরায়েলে কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। ইসরাইলের এই ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ- এর আড়ালে হামাস খুব চতুরতার সাথে তাদের পরিকল্পনা সাজায়।

এরপরের ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। ইসরায়েলে প্রবেশ করে বিভিন্ন দিক থেকে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়, ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে সৈন্যদের হত্যা ও আটক করা হয়। একইসঙ্গে সামরিক সরঞ্জাম দখল করা হয়।
এসব কার্যক্রমের পেছনে মনস্তাত্ত্বিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, যার মধ্যে আছে ইসরায়েলি সীমান্ত এলাকায় আক্রমণ রেকর্ড করে সম্প্রচার করা, একটি সংগীত কনসার্টের পাশাপাশি ইসরায়েলি সৈন্য এবং বেসামরিক নাগরিকদের আটক করে তাদের গাজা উপত্যকায় নিয়ে আসা।

হামাস অতিত-বর্তমানের বিভিন্ন উৎস থেকে শিক্ষা নিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে অতীতের সংঘর্ষ থেকে শিক্ষা নিয়েছে, ২০০২ সালে জেনিনে যোদ্ধাদের দ্বারা ব্যবহৃত কৌশলগুলো অধ্যয়ন করেছে এবং তার সঙ্গে যোগ করেছে তাদের নিজস্ব কৌশলগুলোও। এমনকী তারা হিজবুল্লাহর সামরিক অবকাঠামো এবং বিদ্রোহীদের যুদ্ধকৌশল থেকেও অনুপ্রেরণা নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে অতীতের সংঘর্ষ হামাসকে, বিশেষ করে ২০১৪ সালে গাজায় হামলার সময় কীভাবে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), টানেল নেটওয়ার্ক, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ যুদ্ধের সর্বাধিক ব্যবহার করতে হয় তা শিখিয়েছে।

কিন্তু  হামাস এমন একটি সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে যাদের কাছে বিশ্বের সবথেকে অত্যাধুনিক ভারী অস্ত্রশস্ত্র এবং বিমান শক্তি রয়েছে। অন্যদিকে হামাসের কাছে ঘরে তৈরি আইইডি, রকেট এবং হালকা অস্ত্র ছাড়া আর কিছুই নেই।
এ কারণেই গোষ্ঠীটি কৌশলের ওপর নির্ভর করবে সবচেয়ে বেশি। সরাসরি সংঘর্ষে না গিয়ে হিট-অ্যান্ড-রান আক্রমণ এবং স্নাইপার ফায়ারের কৌশল ব্যবহার করে নিজেদের সদস্যদের হতাহতের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা চালাবে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত যা স্পষ্ট নয় তা হলো, হামাস এই সর্বশেষ হামলা থেকে কী আশা করছে। কারণ ওই অঞ্চল থেকে হামাসের বড় কোন সামরিক সমর্থন পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এখন যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা হলো- গাজার নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকরা আরও দুর্ভোগ পোহাবে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, শিগগিরই স্থলপথেও আক্রমণ শুরু করবে ইসরায়েল।

 

 

Advertisement
Share.

Leave A Reply