ক্ষমা চেয়েও পার পেলেন না অস্কারজয়ী অভিনেতা উইল স্মিথ। চরকাণ্ডের জের ধরে এই অভিনেতাকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হলো। এর ফলে অস্কার আসর তো বটেই, একাডেমির অন্যান্য অনুষ্ঠানেও তিনি ১০ বছর অংশ নিতে পারবেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্ট অ্যান্ড সায়েন্স একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘মি. স্মিথকে মঞ্চে যে অগ্রহণযোগ্য ও ক্ষতিকর আচরণ করতে দেখা গেছে, তা পুরো অনুষ্ঠানটিকে ম্লান করে দিয়েছে।’
অন্যদিকে উইল স্মিথ জানিয়েছেন, তিনি একাডেমির সিদ্ধান্ত সম্মান করেন এবং তা মেনে নিয়েছেন।
বিবৃতিতে একাডেমি বলেছে, অনুষ্ঠানের শিল্পী এবং অতিথিদের সুরক্ষা দেয়া এবং একাডেমির ওপর বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উইল স্মিথের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
একাডেমি আরও বলছে, যখন ওই চড়কাণ্ডের ঘটনা ঘটে, তখন বিষয়টিকে ঠিকভাবে দেখা হয়নি এবং এমন আকস্মিক ঘটনার জন্য প্রস্তুতিও ছিল না। সেজন্য একাডেমি ক্ষমা প্রার্থনা করেছে।
অস্কার একাডেমি যদি কারও উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে তাহলে একাধিক শৃঙ্খলাজনিত ব্যবস্থা নিতে পারে। যেমন তাকে ভবিষ্যতের অস্কার পুরস্কারে মনোনয়ন নাও দেয়া হতে পারে। পুরস্কারের জন্য তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে। অথবা তাকে দেয়া সর্বশেষ পুরস্কার ফেরত নিতেও পারে।
তবে জানা গেছে, একাডেমির বোর্ড অব গভর্নরের একজন সদস্য হোপি গোল্ডবার্গ বলেছেন, তারা সর্বশেষ অস্কারের পুরস্কারটি ফিরিয়ে নেয়ার কথা ভাবছেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার পর উইল স্মিথ কী করতে পারবেন আর কী পারবেন না, তার বিস্তারিত জানায়নি একাডেমি।
উইলকে একদিকে যেমন এসব শাস্তি দিচ্ছে একাডেমি, অন্যদিকে এমন ঘটনার পর ক্রিস রক যে অনুষ্ঠান সুন্দর করে চালিয়ে গেছেন তার জন্য একাডেমি থেকে ক্রিসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে কমিটি।
উইল অবশ্য এই ঘটনার পর ১ এপ্রিল পদত্যাগ করেন অস্কার একাডেমি থেকে। ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেছিলেন, অস্কার অনুষ্ঠানে তার আচরণ ছিল মর্মান্তিক, বেদনাদায়ক ও অমার্জনীয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাগাজিন ফোর্বস জানিয়েছে, পদত্যাগ করলেও উইল স্মিথকে তার প্রাপ্ত পুরস্কার ফেরত দিতে হবে না। তিনি ভবিষ্যতে পুরস্কারের জন্য পাবেন, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণও পেতে পারেন। তবে অস্কারের কোন আয়োজনে ভোট দিতে পারবেন না।
শুধু অস্কার একাডেমিই নয়, উইল স্মিথের সঙ্গে প্রকল্প স্থগিত করেছে সনি এবং নেটফিক্স।
উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ লস অ্যাঞ্জেলসের ডলবি থিয়েটারে আয়োজিত ৯৪তম অস্কার অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে উইল স্মিথের স্ত্রীকে নিয়ে উপস্থাপক ক্রিস রক মজা করছিলেন। এক সময় তিনি উইলের স্ত্রী জেডা পিঙ্কেটের টাক মাথাকে ‘জি আই জেন’ এর অভিনেত্রী ডেমি মুরের সাথে তুলনা করেন। এই সিনেমায় অভিনেত্রী ডেমি মুরের চুল খুব ছোট করে ছাঁটা ছিল।
এই রসিকতার পরেই উইল স্মিথ মঞ্চে উঠে ক্রিস রককে চড় মেরে বসেন। নিজের আসনে ফিরে আসার সময়ে উইল স্মিথ চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তোমার মুখ থেকে আমার স্ত্রীর নাম উচ্চারণ করা বন্ধ রাখো।’
জেডা পিঙ্কেট স্মিথ অ্যালোপেশিয়া রোগে ভুগছেন। আর এ কারণেই তার মাথার চুল পড়ে গেছে। তবে ক্রিস রক এই ঘটনার পর নিজেকে সুন্দরভাবে সামলে পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।