একুশ শতক অর্থাৎ ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের জনসংখ্যা কমবে বা সঙ্কুচিত হবে। যে কয়েকটি দেশে জন্মহার স্বাভাবিক থাকবে তার বেশিরভাগই উন্নয়নশীল দেশ।
সোমবার (১৮ মার্চ) ল্যানসেট প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য ওঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় কোনও দেশেই জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ফার্টিলিটি রেট যথেষ্ট থাকবে না। ফলে বিশ্বের ২০৪টি দেশের মধ্যে ১৯৮টির জনসংখ্যাই হ্রাস পাবে। সে সময় বিশ্বে যে সব শিশু জন্ম নেবে তাদের মধ্যে প্রতি দুইজনের একজনই জন্মাবে সাব-সাহারান আফ্রিকায়। আর সেসময় কেবল সোমালিয়া, টোঙ্গা, নাইজার, চাদ, সামোয়া এবং তাজিকিস্তান তাদের জনসংখ্যা (বৃদ্ধির ধারা) বজায় রাখতে সক্ষম হবে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই) পরিচালিত একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সেসব দেশ হলো সোমালিয়া, টোঙ্গা, নাইজার, চাদ, সামোয়া এবং তাজিকিস্তান। শুধু এই অঞ্চলগুলোতেই জন্মহার স্বাভাবিক থাকবে।
গবেষণার সহ-প্রধান লেখক এবং আইএইচএমই-এর ভারপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক অস্টিন ই শুমাখার বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ জন্মহারের কারণে সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি বা সম্ভাব্য মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকির সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকিগুলো মোকাবিলা করা।’
তিনি বলেন, ‘জন্মের সংখ্যার এই বিশাল পরিবর্তন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে, স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো উন্নত করার প্রচেষ্টায় এই অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয় এবং চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ ও নারীর প্রজনন অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপের পাশাপাশি শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস অব্যাহত রাখা, পরিবার পরিকল্পনা এবং মেয়েদের শিক্ষার বিষয়টি প্রতিটি সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে থাকতে হবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৫০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে করা সমীক্ষা, আদমশুমারির তথ্য এবং সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য ও অন্যান্য উৎসের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণাটি করা হয়েছে। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ, ইনজুরি এবং রিস্ক ফ্যাক্টরস স্টাডির অংশ হিসেবে এই গবেষণাটি করা হয়। ১০ বছর দীর্ঘ এই গবেষণায় ১৫০টি দেশের ৮ হাজারেরও বেশি বিজ্ঞানী সহযোগিতা করেছেন।