আমরা কি ভুলে গেছি মোনেম মুন্নার কথা? বাংলাদেশে ভুলক্রমে জন্মানো মোনেম মুন্না। না কথাটা কোনো উড়ে আসা কথা না। কথাটা বলেছিলেন জাতীয় দলের সাবেক জার্মান কোচ অটো ফিস্টার। সেই ফিস্টার যে কিনা ঘানাকে জিতিয়েছিলো যুব বিশ্বকাপ, টোগোকে খেলিয়েছিলেন বিশ্বকাপের মূলপর্ব।
১৯৮৪। সালটা স্মরণীয় মুন্না ভক্তদের কাছে। সেই বছরই প্রথম পেশদার লিগে নাম লেখান তিনি। ২ বছর মুক্তিযোদ্ধা, ১ বছর ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলার পর গায়ে জড়ান বাংলাদেশ গর্বের জার্সি। তারপর ১৯৮৭ সালে যোগ দেন আকাশী নীল শিবিরে। আস্তে আস্তে হয়ে উঠেন তিনি পরিণত স্টপার। ভক্তদের কাছে পরিচিতি পান ‘কিংব্যাক’ নামে।
১৯৯১ সালে উপমহাদেশের রেকর্ড ২০ লক্ষ টাকায় চুক্তি করেন আবাহনীর সাথে। সেই বছরই ইস্টবেঙ্গল এর কোচ নাইমুদ্দিন তাকে ভারতের খেলার প্রস্তাব দেন। আস্তে আস্তে ভারতেও পরিচিতি পান তিনি। হয়ে যান ইস্টবেঙ্গল স্টার। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত একটানা খেলেছেন জাতীয় দলে। তার মধ্যে পালন করেন দলের অধিনায়কের দায়িত্ব। মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত ৪ দলের টুর্নামেন্ট ছিল বাংলাদেশের জয় পাওয়া প্রথম কোনো টুর্নামেন্ট।
১৯৯৯ সালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান এই তারকা ফুটবলার। সেখানে তার কিডনিতে সমস্যা ধরা পড়ে। ২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারি গুরুতর অসুস্থ মুন্নাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় তিন সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সে বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
ফুটবল খরার এই সময়ে আমাদের হয়তো মনে নেই শতাব্দীর সেরা এই বাংলাদেশি ফুটবলারের কথা। খুব তাড়াতাড়ি ভুলে গেছে বাংলাদেশ। সেই অভিমানেই হয়তো নতুন কোনো মোনেম মুন্নার পায়ে কেঁপে উঠে না দেশিয় ফুটবল। ওপারে ভালো থাকুন মোনেম মুন্না। আমি, বাংলাদেশ আরো কয়েক শতাব্দী হয়তো হারিয়ে খুঁজবো আমাদের ফুটবলকে, হারানো অতীতকে।