প্রথম ইনিংসজুড়ে ছিল বৃষ্টির বাগড়া। ম্যাচের দৈর্ঘ্যও কমতে থাকে তাতে। ম্যাচ শুরুর আগেই প্রথম ওয়ানডে নেমে এসেছিল ৪৬ ওভারে। এরপর ৪০, এরপর ৩০ ওভারে। উইল ইয়াং ও টম ল্যাথামের ঝড়ে বড় সংগ্রহই পায় নিউজিল্যান্ড। ল্যাথামের ৯০ ও ইয়াংয়ের ১০০ পেরোনো ইনিংস নিয়ে কিউইদের সংগ্রহ দাড়ায় ২৩৯। ডিএলএসে বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয় ২৪৪ রানের।
রবিবার ডানেডিনে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন শরিফুল ইসলাম। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করা রাচিন রবীন্দ্র আউট হয়ে যান কোনো রান করার আগেই। শরিফুলকে প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন উইল ইয়াং। পরের বলে প্রান্ত বদল হয়।
স্ট্রাইকে এসে প্রথম বল ছেড়ে দেন রাচিন। এরপর অফ স্টাম্পের একটু বাইরের বল ব্যাটে কানা ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে যায়। এক বল বিরতি দিয়ে শরিফুল উইকেট নেন আরও একটি। এবার অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল ডিফেন্ড করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন হেনরি নিকোলস। প্রথম ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫ রান করে নিউজিল্যান্ড।
এরপর উইল ইয়াং ও টম ল্যাথামের জুটি পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলে। মাঝে আরেক দফা বৃষ্টিতে ম্যাচ চলে আসে ৪০ ওভারে। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলেও জুটি ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। এই জুটি পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যায়। দুজনই হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন। এর মধ্যেই বৃষ্টি আসে আবার।
এ দফায় প্রায় ঘণ্টাখানেক খেলা বন্ধ থাকার পর ম্যাচ চলে আসে ৩০ ওভারে। তাতে বাংলাদেশ পড়ে যায় বিপত্তিতে, একজন বোলার করতে পারবেন সর্বোচ্চ ৬ ওভার। হাসান মাহমুদ সেটি করে ফেলেন আগেই, শরিফুল ও মোস্তাফিজুর রহমানের বাকি ছিল এক ওভার। বাংলাদেশকে তখন ভরসা করতে হয় সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজদের ওপর।
তাদের ওপর চড়াও হন টম ল্যাথামও উইল ইয়াং। বৃষ্টির পরে ২১তম ওভারে বোলিংয়ে এসে দুই ছক্কাসহ ১৩ রান আসে। পরের ওভারে মিরাজ ১০ ও এরপর আবার এসে সৌম্য টানা তিনচারসহ দেন ১৫ রান। বাধ্য হয়ে বোলিংয়ে শরিফুলকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক শান্ত। দিনের সফল পেসারও দেন ১০ রান।
পরের ওভারে নিয়ে আসা হয় আফিফ হোসেনকে। কিন্তু তাকেও স্বস্তি দেননি লাথাম-ইয়াং জুটি। ওই ওভারে দুই ছক্কাসহ আসে ১৫ রান। ইয়াং-ল্যাথামজুটি যখন ক্রমেই ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে। এর মধ্যে লাথামকে আউট করে কিছুটা স্বস্তি এনে দেন মিরাজ। শুরুতে সৌম্য স্লিপে ক্যাচ ছাড়েন সৌম্য। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ভালোভাবেই আঘাত করেন তিনি।
মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তুলে মারতে গিয়ে ব্যাট হয়ে পায়ে লেগে বল স্টাম্পে যায়। এর আগে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৭ বলে ৯২ রান করেন তিনি। ইয়াংয়ের সঙ্গে ১৪৫ বলে ল্যাথামের জুটি ছিল ১৭১ রানের। পরে চাপম্যানের সঙ্গেও ২২ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন ইয়াং।
রান তাড়ায় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ, কিছু ব্যাটার আউট হন হতাশাজনকভাবে। মাঝে আফিফ হোসেন ও তাওহীদ হৃদয়ের জুটিতে আশা দেখা গেলেও শেষে এসে হয়নি অবিশ্বাস্য কিছু। ৩০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেছেন বিজয়
বাংলাদেশের হয়ে ৬ ওভারে ২৮ রানে ২ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার শরিফুল ইসলাম। ৫ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে এক উইকেট পেয়েছেন মিরাজ।
এবারের নিউজিল্যান্ড সফরও তাই শুরু হলো হার দিয়ে। নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে সাদা বলে হারানোর অপেক্ষাও বাড়ল আরেকটু। অন্যদিকে টিকে থাকল ডানেডিনে সব সংস্করণ মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটি।