fbpx

এখনই বন্ধ হচ্ছে না খোলা তেল বিক্রি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

গত ১ আগস্ট থেকে বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ করতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

কিন্তু সরকারি নির্দেশনার পর এখনও বাজারে সমান তালে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল। এমন পরিস্থিতিতে শতভাগ প্যাকেট বা বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারজাত করতে ছয় মাস সময় চেয়েছে পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এটি বাস্তবায়নে আগামী সাত দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা দিতে বলেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সোমবার (৭ আগস্ট) খোলা সয়াবিন তেল বিপণন ও বিক্রয় বন্ধ এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন- ২০০৯ বিষয়ক এক সচেতনতামূলক সভায় অতিসত্বর এই আদেশ পালনের নির্দেশ দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এই সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, গত ১ আগস্ট খোলা সয়াবিন তেল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়ার পর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন আমাদের একটি চিঠি দিয়েছে। সেখানে তারা এই জন্য আরও ছয় মাস সময় চেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখব। পাশাপাশি আমরা আজকের সভার একটি রিপোর্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানাব। তারপর বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়ে যে নির্দেশনা দেবে, সেটি আমরা পালন করব। পাশাপাশি আমি ভোজ্যতেল রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ করব, আগামী সাত দিনের মধ্যে সয়াবিন তেল শতভাগ প্যাকজাত করার বিষয়ে তারা তাদের কর্মপরিকল্পনা দিবেন। এই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা, প্রতি মাসে আপনাদের কারখানাগুলো পরিদর্শনে যাব।’

এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, “খোলা তেল যে প্রক্রিয়ায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে আসে, সেখানে নীল ড্রাম ব্যবহার করা হয়। এসব ড্রামে ২০৪ থেকে ২১০ লিটারের মতো তেল থাকে। এসব ড্রামগুলো মূলত কেমিকেলের ড্রাম। এছাড়া এসব ড্রাম থেকে যেভাবে তেল পাম্প করে বোতলে ভরা হয় সেটি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত? এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই সয়াবিন ও পাম তেল শতভাগ প্যাকেট বা বোতলজাত করতে হবে, এই জন্যই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এর জন্য ইন্ডাস্ট্রিগুলোরও প্রস্তুতি লাগবে। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম।“

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভোজ্যতেলের ৭০ শতাংশ পাম তেল এবং ৩০ শতাংশ সয়াবিন তেল। সয়াবিন তেলের প্রায় অর্ধেক খোলা বিক্রি হয় এবং অর্ধেক প্যাকেটজাত হয়ে বিক্রি হয়। কিন্তু আমরা খুচরা পর্যায়ের খোলা সয়াবিন তেল পরীক্ষা করে দেখেছি, অনেকক্ষেত্রে সুপার পাম তেল সয়াবিন হিসেবে বিক্রি হচ্ছে, পাম তেল বিক্রি হচ্ছে সুপার পাম বলে। এভাবে ভোক্তাদেরকে প্রতারিত করা হচ্ছে। কারণ খোলা তেলে কোম্পানির নাম, মেয়াদ এবং পাম না সুপার সেটি লেখা থাকে না।

সভায় সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ভোজ্যতেল খোলা বিক্রি করব না, এই বিষয়ে আমাদের কারও দ্বিমত নেই। অনেকদিন ধরে আমরা ভোজ্যতেল কীভাবে প্যাকেটজাত করা যায়, সেটি চেষ্টা করছি। বাস্তবতা হলো, আমাদের কিছু মিল অনেক এগিয়ে গেছে। কিছু মিল হয়তো আগামী ছয় মাসের মধ্যে শতভাগ প্যাকেটজাত ভোজ্যতেল সরবরাহ করতে পারবে। একটি মিল আছে যাদের আরও একটু বেশি সময় লাগবে। এজন্য আমরা ছয় মাস সময় চেয়েছি।

এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান আব্দুল জব্বার মণ্ডল, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের উপ-প্রধান মাহমুদুল হাসান, বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক মনির হোসেন, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রোগ্রাম কর্ডিনেটর আহমেদ ইকরামুল্লাহ, এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি ও কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply