কিছু মানুষ আছে যারা বৃষ্টিকে অনুভব করে, বাকিরা শুধু শরীর ভেজায়। বব মার্লের বিখ্যাত উক্তি পাঠকদের অবচেতন মনে ভাবনার উদ্রেক ঘটাতে পারে। তবে এমনটাই ভাবনা এখন স্প্যানিশ লিগ লা-লিগার দর্শকদের মনে। কিছু মানুষ এখনও লিগটাকে উপভোগ্য ভাবছে, বাকিরা শুধুই দেখছে মহারণ। সেই কিছু মানুষ হচ্ছে দুই মাদ্রিদ- আতলেতিকো আর রিয়ালের সমর্থক, আর সত্যিকারের ফুটবলপ্রেমীরা। বাকিদের কাছে শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।
আনুষ্ঠানিকতা হোক কিংবা চ্যাপলিনের মতো উপভোগ্য, শনিবার (২২ মে) বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় দুই মাদ্রিদের ম্যাচেই যে নির্ধারণ হবে এবারের লা-লিগার শিরোপা। ঘরের মাঠে ভিয়ারিয়ালকে আতিথ্য দেবে শিরোপা প্রত্যাশী রিয়াল মাদ্রিদ, আর ভায়োদালিদের ঘরের মাঠে একপ্রকার পরীক্ষায় নামবে আতলেতিকো। লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে আপনার আগ্রহ থাকলে বসতে হবে টিভি সেটের সামনে, সময় রাত দশটা।
এমনিতে খুব বহুদূর চিন্তা করার মানুষ আতলেতিকো বস দিয়াগো সিমিওনে নন, তার ভাবনায় বরাবরই ‘ওয়ান ম্যাচ এট অ্যা টাইম’। আর এবার তো চাইলেও এর ব্যতিক্রম সম্ভব নয়। ম্যাচই বাকি আছে একটা, তার উপরে নিজেদের শিরোপা সম্ভাবনা আছে নিজেদের হাতেই। সমীকরণ পানির মতো সহজ, নিজেরা জেতো, পূর্ণ তিন পয়েন্ট পকেটে পুড়ো আর উল্লাস করো শিরোপা নিয়ে।
আতলেতিকো হোঁচট খেলেও শিরোপা উৎসব হবে মাদ্রিদেই, দুই পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা রিয়াল ঘরের মাঠ আলফ্রেদো দি স্তেফানোতে জয় পেলে আর আতলেতিকো পয়েন্ট হারালে শিরোপা উৎসব করবে জিদানের দল। তাই রিয়াল শিরোপা ভাগ্য একপ্রকার ঝুলছে যদি-কিন্তু-তবের দড়িতে, সেই দড়ির নাম আতলেতিকো। ফলাফল যাই হোক, শিরোপা মাদ্রিদেই থাকছে।
আতলেতিকো সর্বশেষ যখন লিগ শিরোপা জিতেছিল, সেই ২০১৪ সালেও লিগের নিষ্পত্তি হয়েছিল শেষদিনে। এবারেও তাই। শেষের কবিতার কাব্যগাঁথা আছে আরো, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজকেই হতে পারে রিয়ালে জিদান অধ্যায়ের সমাপ্তি। শিরোপার লড়াই থেকে আগেই ছিটকে পড়া বার্সেলোনা অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়েছে এইবারের ঘরের মাঠে, কান পাতলে গুঞ্জন শোনা যায় বার্সার ডাচ কোচ রোনাল্ড ক্যুমানের শনিবার হয়ে যাবে ফেয়ারওয়েল।
বার্সার প্রাণভ্রোমরা লিওনেল মেসি যে শেষ ম্যাচ খেলছেন না, এটা পুরোনো খবর। মেসি যদি চুক্তি নবায়ন না করেন, তাহলে গত রবিবার সেল্টাভিগোর বিপক্ষে খেলা ম্যাচ হবে বার্সার হয়ে মেসির বিদায়ী ম্যাচ। শিরোপা লড়াই ছাপিয়ে তাই বার্সা সমর্থকদের হৃদয়ে নিশ্চয়ই ব্যাকুল সুর আর ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে,
‘যেতে নাহি দিব।
হায়, তবু যেতে দিতে হয়,
তবু চলে যায়!’