আগের ইনিংসে যখন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১২৫ রানে ইনিংস শেষ করলো, মনে হচ্ছিলো, ‘ধুচ্ছাই! আবারো সেই মিরপুরের নিচু মন্থর উইকেটে টি-টোয়েন্টি?”
তবে পরের ইনিংসেই ফরচুন বরিশালের ব্যাটাররা দেখালেন, এটা যে মিরপুরের চিরায়ত পিচ নয়, ‘মানসিকতা’ ঠিক থাকলে এই পিচেও বড় রান করা যায়। সৈকত আলী-ইরফান শুক্কুরদের দেখেশুনে শুরুটা ভালোমত পরিণতি দিলেন জিয়াউর রহমান। ১৮.৪ ওভারে চট্টগ্রামের দেওয়া ১২৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করে বিপিএলের প্রথম ম্যাচটি ৪ উইকেটে জিতে নিলো ফরচুন বরিশাল। মাঝখানে মেহেদী মিরাজ এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে একটু ‘টুইস্ট’ না দিলে হয়তো বরিশালের জয়টা আরো সহজই হত।
হেলমেটে টেপ দিয়ে বিসিবির লোগো ঢেকে দেওয়াসহ নানান অসঙ্গতি সত্ত্বেও মাঠের খেলায় ব্যাটে বলে ভালো লড়াই দেখারই আশা ছিলো। উইকেটও মিরপুরের চিরায়ত স্লো ড্যাম্প চরিত্রের ছিলোনা। কিন্তু এমন পিচে যে ব্যাটিংটা করার কথা সেটিই করতে ব্যর্থ হয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
টসে হেরে বোলিং প্রথম স্কোরিং শটই ছক্কা দিয়ে শুরু করেন চট্টগ্রাম ওপেনার কেনার লুইস। তৃতীয় বলেই ছক্কা মারতে গিয়েই লং অনে ক্যাচ আউট হন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় চ্যালেঞ্জার্স। আফিফ হোসেন, সাব্বির রুম্মন, মেহেদী মিরাজ , শামীম পাটোয়ারী, নাঈম ইসলাম বা বিদেশী উইল জ্যাকস- কেউই চট্টগ্রামকে টি-টোয়েন্টির সেই ‘রিদম’টা এনে দিতে পারেননি। আবার অনেক সময় চেষ্টা করেছেন কিন্তু সাকিবের দুর্দান্ত ফিল্ড সেটিংয়ে ধরা পড়েছেন।
৭ম উইকেটে বেনি হাওয়েল ক্রিজে আসার আগে চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ ছিলো উইল জ্যাকসের ১৬। ৪জন ব্যাটারের রানই ছিলো ১০ এর নিচে। বেনি হাওয়েল আসলেন আর দেখালেন এসব পিচে কিভাবে ব্যাট করতে হয়। ২০ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে ডোয়াইন ব্রাভোর বলে আউট হলেও তাঁর জন্যই চট্টগ্রামের স্কোরটা হয়েছে ‘একটু’ ভদ্রস্থ!
সাকিব আল হাসান অসম্ভব কিপটে বোলিং করেছেন ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৯ রান নিয়েছেন ১টি উইকেট। আলজারি জোসেফ ৩২ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। দ্বিতীয় ওভারেই তুলে নিলেন নাজমুল শান্তকে। কিছুক্ষন পর সাকিব আল হাসানের উইকেট অবশ্য বলতে গেলে সাকিবই ছুঁড়ে দিয়েছেন।
বরিশালের জাহাজ ঠিকপথে রাখছিলেন ওপেনার সৈকত আলী। স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলছিলেন। সেট হয়ে এরপর বিগ শটস খেলা শুরু করেছিলেন। তবে মেহেদী মিরাজের বলে বেনি হাওয়েলের একেবারে বাউন্ডারি লাইনের একটি ক্যাচ হয়ে ফেরেন ৩৫ বলে ৩৯ রানে। এরপর ইরফান শুক্কুরকেও আউট করেন মিরাজ একই ওভারে, তিনিও দারুন খেলছিলেন। তবে ঐ আউটটি নিয়ে বিতর্ক থাকবে। মিরাজের হ্যাটট্রিক হয়নি, তবে ঐ ওভারেই সালমান হোসেন আত্মহত্যাসূচক একটি রানআউট করে নাটক আরো জমিয়ে দেন। মিরাজ ৪ ওভারে ১৬ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট!
তবে জিয়াউর রহমান নাটকের ‘মুডে’ ছিলেননা বোধহয়। অপরপাশের ডোয়াইন ব্রাভোকে কোন চিন্তাই করতে দিলেন না। নিজেই ২ চার ১ ছক্কায় ১২ বলে ১৯* রান করে জিতিয়ে ফিরলেন বরিশালকে।
তথ্যসূত্র: অলরাউন্ডার