fbpx

বাংলার নীল নদ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সিলেট থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় স্বচ্ছ নীল পানির নদী লালাখাল। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। সিলেটে অনেক পর্যটন এলাকার মধ্যে লালাখাল আকর্ষণীয় একটি স্থান। পাহাড়জুড়ে সবুজ বন, নদী, চা-বাগান এবং নানা জাতের বৃক্ষের সমাহার লালাখালজুড়ে।

নৌকা একটু একটু করে সামনে আগাবে মনে হবে নতুন একটা অধ্যায়ে প্রবেশ হচ্ছে । নদীর দুই পাড়ে বাড়িঘর তেমন নেই। শুধু আছে বাহারি গাছপালা। যেন চারপাশে সবুজের হাতছানি। নদীর বাক গুলো যে কতটা নিখুঁত আর প্রাণবন্ত হতে পারে তা লালাখালের দৃশ্য না দেখলে বোঝানো যাবে না।

বাংলার নীল নদ

ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলাতে থাকে লালাখাল। ভরা বর্ষায় লালাখালের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তবে বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে লালাখালের পানি হারিয়ে ফেলে স্বচ্ছতা। তখন পানি বেশ ঘোলাটে বর্ণ ধারণ করে।
মূলত জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা প্রবাহমান পানির সাথে মিশে থাকা খনিজ এবং কাদার পরিবর্তে নদীর বালুময় তলদেশের কারণেই এই নদীর পানির রঙ এরকম দেখায়।

নদীর পানিতে পা ভিজিয়ে বসে থাকা যাবে পুরোটা সময়।এ যাত্রা আপনাকে লালাখালের সৌন্দর্য্যে বাকরুদ্ধ করে রাখবে। সন্ধ্যার পর নদীতে নৌকা থাকে না, তাই সন্ধ্যার মধ্যে চলে আসাই ভালো।

বাংলার নীল নদ

কিভাবে যাবেনঃ 
সিলেট শহর হতে লালাখালের দূরত্ব ৩৫ কি.মি। সিলেটের শিশু পার্কের সামনে থেকে লেগুনা অথবা জাফলংয়ের বাসে চেপে সিলেট-তামাবিল সড়ক ধরে যেতে হবে সারিঘাট। শহর থেকে লালাখাল পর্যন্ত ৬-৮ জন বহনকারী মাইক্রো ভাড়া হতে পারে ৩৫০০ – ৪০০০ টাকার মধ্যে। ৯-১২ জন বহনকারী মাইক্রো ভাড়া হতে পারে ৪৫০০ – ৫,৫০০ টাকার মধ্যে। শুক্রবার হলে আরেকটু বেশী ও হতে পারে। সারিঘাট থেকে স্থানীয় নৌকা নিয়ে লালাখাল যেতে খরচ পড়বে ১০০০-১৫০০ টাকার মতো। আর নাজিমগড় বোট স্টেশনের নৌকাগুলোর ভাড়া ২০০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত। গাড়ী নিয়ে লালাখাল চলে গেলে রিভারকুইন রেস্টুরেন্ট থেকে আধাঘণ্টার জন্য নৌকা ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকা।

বাংলার নীল নদ

থাকার জায়গাঃ
লালাখালে থাকার তেমন কোন সুবিধা নাই। সাধারণত পর্যটকরা সিলেট শহর হতে এসে আবার সিলেট শহরের হোটেলে রাত কাটায়।

কি খাবেনঃ 
সিলেটর জিন্দাবাজার এলাকার পানসী, পাঁচ ভাই কিংবা পালকি রেস্টুরেন্টের সুলভ মূল্যে পছন্দমত নানা রকম দেশী খাবার খেতে পারেন। এইসব রেস্টুরেন্টের বাহারী খাবার পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া সিলেট শহরে বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট আছে, আপনার পছন্দ মত যে কোন জায়গায় খেয়ে নিতে পারেন।

বাংলার নীল নদ

সিলেটের আরো কিছু দর্শনীয় স্থানঃ 
এছাড়াও সিলেট শহর ও সিলেটের আশেপাশে যে সকল দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করতে পারেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থান হলো: হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার, মালনীছড়া চা বাগান, জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, লোভাছড়া, পান্থুমাই ঝর্ণা, সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা, ক্বীন ব্রিজ, হাকালুকি হাওর, ভোলাগঞ্জ, জাকারিয়া সিটি, আলী আমজাদের ঘড়ি ইত্যাদি।

সাবধানতাঃ 
ভ্রমণে আনন্দ উপভোগের জন্য প্রয়োজন দুর্ঘটনা এড়ানো। অদ্ভুত নীল পানি আর ঘন জঙ্গলে বেষ্টিত লালাখালে গেলে তাই চাই বাড়তি সতর্কতা। পানিতে নামার সময় খেয়াল রাখতে হবে পানির গভীরতা কতটুকু? প্রয়োজনে গাইড কিংবা সঙ্গে যাওয়া কারো সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে।
প্রকৃতি যেমন আমাদের পাশে রয়েছে তেমনই আমাদের উচিত প্রকৃতির পাশে থাকা। প্রকৃতির সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখতে আমাদের দরকার সচেতনতা।

বিবিএস ডেস্ক 

Advertisement
Share.

Leave A Reply