বিশ্বের প্রায় প্রতিটি ক্রিকেট খেলুড়ে দলের ড্রেসিংরুমের নিজস্ব কিছু প্রচলিত নিয়ম থাকে। তেমনই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ড্রেসিংরুমের একাধিক নিয়ম রয়েছে। যেমন- জয়ী ম্যাচের পর সবাই মিলে ‘উই শ্যাল ওভার কাম’ গানটি গাওয়া। এমন ছোট-বড় অনেক প্রচলনের সঙ্গে আছে ‘মেরুন জার্সি’।
সাধারণত বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব কিছুর সঙ্গে লাল-সবুজ মিলে থাকে। মাঝে মাঝে এর ব্যত্যয় হয় না এমন না। এবার বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমেও দেখা মিললো মেরুন রঙের জ্যাকেট তথা ‘মেরুন জ্যাকেট’। বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে বিশেষ এই পোশাকের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে গত বিশ্বকাপ থেকে।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রথম মেয়াদে কোচ থাকাকালে একটি ক্রিকেটীয় পরিভাষা চালু করেন। তা হচ্ছে ‘ইম্প্যাক্ট ক্রিকেটার’। এর মাধ্যমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ক্রিকেটার খোঁজার দিকেই তার মনোযোগ ছিল। দ্বিতীয় মেয়াদেও টাইগারদের দায়িত্ব নিয়ে তিনি সেটাই বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এবার নতুনত্ব এনে চালু করেছেন ‘মেরুন জ্যাকেট’ পুরস্কার।
ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে শুভসূচনা করে বাংলাদেশ। সে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হন মেহেদী হাসান মিরাজ। সেদিনই যাত্রা শুরু মেরুন জ্যাকেটের।
তবে ম্যাচ সেরা হলে বা সর্বোচ্চ রান করলেই যে শুধু এই মেরুন জ্যাকেট দেওয়া হয়, এমনও নয় ব্যাপারটা। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া কোনো ছোট্ট পারফরম্যান্সের জন্যও পেতে পারে এই জ্যাকেট। এমনকি হারা ম্যাচে বীরত্বপূর্ণ কিছু করে দেখাতেও পারলে গায়ে উঠতে পারে মেরুন জ্যাকেট। এই জ্যাকেট পেলে সেই পারফর্মারের নাম, ম্যাচ আর পারফরম্যান্স কালো মার্কার দিয়ে ছোট্ট করে লিখে দেওয়া হয় জ্যাকেটটিতে।
মেরুন জ্যাকেটের ভাবনার শুরুটা কিভাবে হয়েছিল, জানালেন টিম ম্যানেজার নাফিস ইকবাল, ‘এই মেরুন জ্যাকেটের কনসেপ্ট এসেছে একটা গান থেকে। যেখানে একজনকে দেখা যায় একটা মেরুন জ্যাকেট পরে পুরো ব্যান্ডটাকে উৎসাহিত করে। প্রথমে ব্যান্ডটা খুব নার্ভাস থাকে, তাদের ট্রায়াল চলে ওই সময়। তখন হঠাৎ করে একজন এসে গানটা এত সুন্দর করে গায়, সবাইকে পুরো উত্তেজিত করে ফেলে। ওই জিনিসটাই আমাদের এখানে এই কনসেপ্ট নিয়ে এসেছে।’
হার-জিত ছাপিয়ে মেরুন জ্যাকেট দলকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রাখছে। তাই হারা ম্যাচে দারুণ ইনিংস খেলে এই জ্যাকেট গায়ে চাপিয়েছেন জাকের আলী। কখনওবা তানজিদ তামিম একটা ছক্কা হাঁকিয়েই পেয়েছেন মেরুন জ্যাকেট। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও পেয়েছেন এই সম্মানের উপহার।
