পাইলাম, অবশেষে আমি ইহাকে পাইলাম- বিশ্বকাপ জয়ের পর লিওনেল মেসির জন্য এই কথাটাই সবচেয়ে বেশি খাটে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সোনালী ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় আর্জেন্টাইনদের। ফ্রান্সের সঙ্গে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ জয়ের পর আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে কালো রঙের একটি আলখাল্লা পরিয়ে দেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই আলখাল্লা পরানোয় মেসির জার্সির কিছু অংশ ঢেকে যায় বলে অভিযোগ করেন অনেকে। বিশেষ করে জার্সিতে থাকা আর্জেন্টিনার জাতীয় ব্যাজ ঢেকে যায়। কেউ বলেন, এটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা, যা বিশ্বকাপের ট্রফি বিতরণের সঙ্গে বেমানান। মেসিকে এই পোশাক পরানো অবস্থাতেই হাসি মুখে বিশ্বকাপ তুলে দেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফানতিনো।
কাতারের আমির মেসিকে যে আলখাল্লা পরিয়েছেন, তা আরব দেশগুলোর পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। সাধারণত উল দিয়ে এই আলখাল্লা তৈরি করা হয়। সাদা, ক্রিম, কালো, বাদামি, ধূসর বিভিন্ন রঙের হয়। এটি সাধারণত পোশাকের ওপর পরা হয়। আরবি ভাষায় এই পোশাককে বলা হয় ‘বিশ্ত’, যা ফার্সি থেকে এসেছে। এটি কোন অনুষ্ঠান, বিয়ে, উৎসব বা বিশেষ দিনে পরা হয়। আরবে এটিকে আভিজাত্যের প্রতীক বলেও মনে করেন অনেকে। এটি মূলত ধর্মনিরপেক্ষ একটি পোশাক।
ইস্তানবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ মারুফ এক টুইট বার্তায় জানান, ‘কাতারের সংস্কৃতি অনুসারে কাউকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে বিস্ত পরানো হয়। বিশ্বকাপ জেতার কারণে মেসিকে সম্মান করে কাতারের আমির এ পোশাক পরিয়েছেন। পশ্চিমা গণমাধ্যমের উচিত ভিন্ন দেশের সংস্কৃতিকে সম্মান জানানো।’
বিশ্বকাপ ফাইনালে আয়োজক দেশের দেয়া স্মারক পরে উদযাপন নতুন কিছু নয়। ১৯৭০ সালের ফাইনালে ফুটবল সম্রাট পেলে ব্রাজিলের জয়ের পর মেক্সিকোর ঐতিহ্যবাহী ‘সমব্রেরো’ টুপি মাথায় উদযাপন করেছিলেন।
তবে এ পোশাক নিয়ে থোড়াই কেয়ার করেছেন ফুটবলের খুদে জাদুকর লিও মেসি। আলখাল্লা পরে কাপ নিয়ে গোটা দলের সঙ্গে আনন্দে মেতেছেন তিনি। ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে আর্জেন্টাইনরা ভেসেছে আনন্দের জোয়ারে।
https://www.facebook.com/bbsbangla.news/videos/1327960068035659