বাইরে চৈত্রের কাঠফাটা রোদ তার তেজ দেখালেও ২৪ মার্চ দুপুরে গুলশান ক্লাবের ভেতরটা ছিল একেবারেই কুল।
বিউটি সার্ভিস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যদের জন্য দিনটি ছিল আনন্দেরও বটে। সংগঠনটির সারা বাংলাদেশের সদস্যরা এদিন জড়ো হয়েছিলেন এক ছাদের নিচে।
উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী ও অতিথিদের সঙ্গে শেয়ার করছেন নিজেদের অভিজ্ঞতা, সংকট ও সম্ভাবনার গল্প।
বিএসওএবি’র ২০২১-২০২৩ মেয়াদের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যরা নির্বাচনের পর প্রথমবার মুখোমুখি হলেন সাংবাদিকদের।
আয়োজনে মূল বক্তব্য রাখেন বিএসওএবি সভাপতি কানিজ আলমাস খান। তিনি তার বক্তব্যে সংগঠনটির পক্ষে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও দাবি উপস্থাপন করেন। বিশেষত শিল্প খাত হিসেবে সৌন্দর্যসেবা খাতে ভ্যাট সহনশীল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সৌন্দর্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রসারিত ফ্লোর ভাড়া নিয়ে সেবা কাজ পরিচালনা করতে হয়। এগুলোর জন্য বিপুল পরিমাণ ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। তাছাড়া ভাড়া বাড়ির কারণে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ইন্টারনেট ইত্যাদি খাতেও যে ভ্যাট পরিশোধ করতে হচ্ছে, তা রেয়াত নেওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে বিভিন্ন যোগানদারের কাছ থেকে উপকরণ ক্রয়ের বিপরীতে পার্লার প্রতিষ্ঠানকেই উৎস ভ্যাট পরিশোধ করতে হচ্ছে। কিন্তু যোগানদারের ভ্যাটও রেয়াত নেওয়া যাচ্ছে না। অথচ সৌন্দর্যসেবার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ওই বাড়ি ভাড়া, ইউটিলিটি ব্যয় ও যোগানদারের মূল্যসহ ভ্যাটযুক্ত মোট সেবামূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে সরবরাহ ভ্যাট প্রদান করা হচ্ছে। ফলে ভ্যাটের ওপর ভ্যাট প্রদান করতে হচ্ছে আমাদের। যার ফলে সৌন্দর্যসেবায় প্রায় ২৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা ভ্যাটের মৌলিক নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাছাড়া বর্তমান অর্থবছরের বাজেটে প্রসাধনীর আমদানি পর্যায়ে কর ভার ১৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছে। তাই সেবাপ্রদানের খরচও আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। আমরা ইতোমধ্যেই সৌন্দর্যসেবা শিল্পের ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ আরোপ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছি। আশা করছি, এ ক্ষেত্রে আপনাদেরও সহযোগিতা পাবো।’
তিনি আরও জানান, দেশে নিবন্ধিত পার্লারের সংখ্যা এখন প্রায় সাড়ে তিন লাখ। অন্তত ১০ লাখ নারী এই খাতকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন এবং বাংলাদেশের সৌন্দর্যসেবার মানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে হয়েছেন সক্ষম। একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে এই খাতের টার্নওভার ৫০০ কোটি ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশের কর্মজীবী নারীদের অন্তত ১৮ শতাংশ পার্লারে কাজ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকার বাইরে থেকে আসা সদস্যরা।
আয়োজনে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুমনা হাসান।