ক্রিকেটে বাংলাদেশের নাম এলেই সবার আগে যেই পাঁচটা নাম আসে, তার একটাও নাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজে। অনেকেরই ধারণা, জিম্বাবুয়ে বলেই বিসিবি টি-টোয়েন্টি দল নিয়ে করছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কিন্তু, বাস্তবতা হলো, কোনো এক্সপেরিমেন্ট নয়, টি-টোয়েন্টিতে সিনিয়রদের ছাড়া জিম্বাবুয়েতে খেলার সিদ্ধান্ত বিসিবির অনেক চিন্তা-ভাবনারই ফল।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জয় আজকাল আকাশের চাঁদ, লাভের লাভ তো হচ্ছেই না উল্টো বদলে যাচ্ছে মানসিকতাও। সেকারণেই একটা ইতিবাচক বদল চাচ্ছিলো ক্রিকেট বোর্ড, যার শুরুটাই দলে পরিবর্তন এনে। তারুণ্যে ভরা দল, সকলের মনেই ভালো করার প্রত্যয়, কিছু করে দেখাবার ইচ্ছে। আর সেটাকেই শোকের এই সময়ে শক্তি ভাবছেন নীতিনির্ধারকরা। নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলকে বিসিবি দিয়েছে পূর্ণ সমর্থন। আফিফ-বিজয়-মুনিমদের খেলতে বলা হয়েছে আক্রমণাত্মক মেজাজে, ফলাফল যেটাই হোক না কেনো।
এক-দুইজন নয়, দলের এগারোজনই খেলবে ফেয়ারলেস ক্রিকেট, এমনটাই চাওয়া বিসিবির। যেটা এর আগে কখনোই দেখা যায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেটে, জিম্বাবুয়ে সিরিজে দেখা গেলে সেটা হবে প্রথমবার। কিন্তু ক্রিকেট কালচার এত জলদিই কি বদলে ফেলা সম্ভব? দলটা নতুন, শুরুটাও নতুন বলেই হয়তো সম্ভব।
২২ জুলাই দল ঘোষণার দিন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জালাল ইউনুস এবং খালেদ মাহমুদ সুজন নতুন দলকে নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। তাতে একটা ব্যাপার স্পষ্ট ছিল, ‘টি-টোয়েন্টিতে নতুন করে শুরু।’ সেই শুরুটা কেমন হবে বাংলাদেশের সেটা দেখার অপেক্ষায় ভক্ত-সমর্থক থেকে সকলেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় নিয়ে ফিরুক এটাই থাকবে প্রত্যাশা। কিন্তু দলটা জিম্বাবুয়ে বলেই হয়তো জিতলেও টাইগাররা পাবে না বাহবা, হারলে সামনে দাঁড়াতে হবে সমালোচনার। কিন্তু, এই দলটা কি সমালোচনার যোগ্য?
বাংলাদেশ হারুক কিংবা জিতুক, এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টির নতুন এই দলটার প্রয়োজন সমর্থন। পুরোনোদের তো অনেক সময় দেয়া হয়েছে, ফলাফল তো সকলের জানা। নতুনদের দিয়ে এখনই শুরু করা গেলে হয়তো একদিন টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশ হবে অন্যতম এক পরাশক্তির নাম। মাশরাফী যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন তখন কে ভেবেছিল একদিন এই দলটাই চ্যালেঞ্জ জানাবে পুরো ক্রিকেট দুনিয়াকেই?
মাশরাফী যেমন সমর্থন পেয়েছেন, সোহানের নেতৃত্বে খেলা দলটারও সেটা প্রাপ্য। সিনিয়রদের পরামর্শ, বোর্ডের পাশে পাওয়া আর ভক্ত-সমর্থকদের বিশ্বাস একটা দলকে কিভাবে বদলে দিতে পারে সেটা ওয়ানডে দলটাকে দেখলেই বোঝা যায়। সময় এসেছে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডের পাশে দাঁড়ানোর। শুরুটা হোক ইতিবাচক, শেষটা কেমন হতে পারে সেই চিন্তাকে দূরে সরিয়ে রেখেই। হারানোর তো আর কিছু নেই, যা আছে সবই তো অর্জনের। আর সেই অর্জনেই হোক আগামীর গর্জন।